
বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের গ্রামীণ অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে নবান্নে গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং বিভিন্ন ব্যাঙ্কের যৌথ উদ্যোগে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে দ্রুত ও সহজে ঋণ প্রদান নিশ্চিত করার নতুন কর্মপরিকল্পনা চালু হয়েছে। এই পদক্ষেপের ফলে গ্রামীণ মহিলাদের আর্থিক স্বনির্ভরতা বাড়বে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগও প্রসারিত হবে।
সম্প্রতি নবান্নে স্বনির্ভর গোষ্ঠী বিষয়ক একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যালোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রাজ্যের বিভিন্ন জেলার ব্যাংক প্রতিনিধি, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠী বিষয়ক বিভাগের কর্তাব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় উঠে আসে, গত এক বছরে ঋণ সংযোগ কর্মসূচি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেলেও কিছু জেলায় আরও দ্রুততার প্রয়োজন। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় করে প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকায় থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে দ্রুত ঋণ দেওয়া হবে। এছাড়া ঋণপ্রাপ্তির প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ ও ডিজিটাল করার জন্য বিশেষ পরিকাঠামো গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এই পদক্ষেপ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রামীণ মহিলা ভোটব্যাঙ্কে বিশেষ মনোযোগের ইঙ্গিত বহন করছে। গত ১৪ বছরে প্রশাসনিক কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রামের মহিলাদের আত্মনির্ভর করা হয়েছে এবং নতুন ঋণ উদ্যোগ সেই ধারাকে আরও শক্তিশালী করছে। লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের অভিজ্ঞতা দেখায়, এ ধরনের উদ্যোগের ফলে মহিলারা আর্থিকভাবে আরও স্বচ্ছল হয়ে ওঠেন, যা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের জন্য সহায়ক হতে পারে।
তবে নবান্ন প্রশাসনের বক্তব্য আলাদা। তারা দাবি করছে, এটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ নয়, বরং দীর্ঘদিন ধরে চলা একটি নিয়মিত উন্নয়নমূলক কর্মসূচির অংশ। ব্যাঙ্কের সহযোগিতায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ঋণ প্রদান করে সারা বছর গ্রামীণ অর্থনীতিকে সচল রাখা হয়। এবার সেই প্রক্রিয়াকেই আরও দ্রুত ও কার্যকর করার চেষ্টা করা হচ্ছে, যাতে রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছায়।
মহিলা স্বনির্ভরতা ও গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়নের লক্ষ্যেই এই নতুন উদ্যোগ রাজ্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।
