
পরিসংখ্যানে কী যায় আসে? অস্ট্রেলিয়ার হয়ে যেখানে দুজন ব্যাটারের নামের পাশে হাফ সেঞ্চুরি, সেখানে টিম ইন্ডিয়ার সর্বাধিক স্কোরার হিসাবে ওয়াশিংটন সুন্দর ২৩ বল খেলে অপরাজিত রয়ে গেলেন ৪৯ রানে। মাত্র ১ রানের জন্য হল না অর্ধশতরান। তাতে কী এসে যাচ্ছে? ম্যাচ সামারি নামক হিসেবনিকেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ৫ উইকেটে জয়ী মেন ইন ব্লু। এবার গোল্ড কোস্টে চতুর্থ ম্যাচে সিরিজ ১-১ অবস্থায় নামবেন টি-টোয়েন্টির বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
বছর দুয়েক আগে ঘরের মাঠে ওয়ানডে বিশ্বকাপের সময় থেকেই অন্ততঃ সীমিত ওভারে একটা অদৃশ্য মডেল সেট করে ফেলেছে ভারতীয় দল। নেতৃত্বের ব্যাটন রোহিতের থেকে হাত ঘুরে শুভমান গিল কিংবা সূর্য কুমার যাদবের কাছে পৌঁছলেও এই মডেল অক্ষুণ্ন। নাঃ একেক ম্যাচে একেকজনকে পারফর্ম করলে চলবে না। তাতে বড় কোনও দিনে বিপর্যয় নেমে আসার সম্ভাবনাটা অনেক বেড়ে যায়। বরং যেটা দরকার সেটা হল টিম গেম। প্রতি ম্যাচেই অল্পবিস্তর কন্ট্রিবিউট করতে হবে সকলকে। রবিবাসরীয় হোবার্টে ১৮৭ তাড়া করতে নেমে সেই টিম গেমেই বাজিমাত সূর্যদের।
ভারতের এই দলগত প্রচেষ্টায় যথাসাধ্য সঙ্গত করলেন অজি ফিল্ডাররাও। কখনও ওয়াশিংটনের ক্যাচ পড়ল তো কখনও আবার জিতেশ শর্মার। যদিও ওয়াশিংটনের জীবন পাওয়াটা তাঁর টিম ডেভিডের লোপ্পা ক্যাচ ছাড়ার পুরস্কারস্বরূপ কি না তা নিয়ে চর্চা চলতেই পারে। অস্ট্রেলিয়া ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে বুমরাহর বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ডেভিডের ক্যাচ ফেলেন ওয়াশিংটন। অজি ব্যাটারের নামের পাশে তখন মাত্র ২০। এখান থেকে ৩৮ বলে ৭৪ রানের বিধ্বংসী ব্যাটিং করে দলের ইনিংসের ভিত গড়ে দেন তিনি।
একে ছোট মাঠ, তায় আগের দিনই প্রথমে ব্যাট করে হারতে হয়েছে। চলতি সফরে প্রথমবার টসে জেতার পর স্বাভাবিকভাবেই ফিল্ডিং নিয়েছিলেন সূর্য কুমার যাদব। ভারত অধিনায়কের এই সিদ্ধান্তকে মান্যতা দিয়ে শুরুতেই ক্যাঙ্গারুদের জোড়া ধাক্কা দেন অর্শদীপ সিং। এশিয়া কাপ ফাইনালের পর গত ম্যাচেও তাঁকে বসিয়ে রাখা হয়েছিল রিজার্ভ বেঞ্চে। সেটা যে কতবড় ভুল সিদ্ধান্ত তা ট্র্যাভিস হেড (১) এবং জস ইংলিশকে (১) ফিরিয়ে দেখিয়ে দেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ভারতের সর্বাধিক উইকেট প্রাপক।
১৪ রানে ২ উইকেট হারিয়ে কিছুটা বেসামাল হয়ে পড়া অস্ট্রেলিয়া ঘুরে দাঁড়ায় মিচেল মার্শ এবং টিম ডেভিডের পার্টনারশিপে। অধিনায়ক মার্শ (১১) তেমন কিছু করতে না পারলেও তৃতীয় উইকেটে তাঁর সঙ্গে মিলে ৫৯ রান যোগ করেন ডেভিড। এরপর অবশ্য বরুণ চক্রবর্তীর ঘূর্ণিতে পরপর দুই বলে দুই উইকেট হারিয়ে ফের কিছুটা ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সেখান থেকে মার্কাস স্টোইনিসের ৩৯ বলে ৬৪ রানের ঝোড়ো ইনিংস ১৮৬/৭ -এর লড়াই করার মতো স্কোরে পৌঁছে দেয় অজিদের। স্টোইনিসকে সঙ্গ দিয়ে শেষের দিকে ১৫ বলে ২৬ রান করে অপরাজিত রয়ে যান ম্যাথু শর্টও।
সব মিলিয়ে অর্শদীপ ৩ উইকেট নিলেও বুমরাহ’র খাতা শূন্য। উইকেট পাননি অক্ষর প্যাটেলও। তবে ব্যাটিংটা হল পুরোপুরি মডেল মেনেই। অভিষেক শর্মা (২৫), শুভমান গিল (১৫), অধিনায়ক সূর্য (২৪), তিলক ভার্মা (২৯), অক্ষর (১৭) সবাই দিলেন একটু একটু করে। বাকিটা ওয়াশিংটন। শুধু ৩ রান বাকি এই অবস্থায় জিতেশ শর্মা (২২*) বাউন্ডারি মেরে দেওয়ায় তাঁর হাফ সেঞ্চুরি হল না, আক্ষেপ থেকে গেল এটাই।
