
বিশ্ব রাজনীতির তেলবাজি এবার সরাসরি পৌঁছে গেল ভারতীয় হেঁসেলঘরে। রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানি বন্ধের পথে, মার্কিন বাণিজ্যিক অবরোধের ফলে জ্বালানির দামে নতুন ঝড়ের ইঙ্গিত মিলছে। এর প্রভাব পড়তে চলেছে দেশের বাজারদরে এবং সাধারণ মানুষের ঘরোয়া খরচে।
সম্প্রতি মার্কিন প্রশাসন রাশিয়ার রোজনেফট ও লুকওয়েল সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এর জেরে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার তেলবাণিজ্যে বড়সড় প্রভাব পড়ছে। গুজরাতের সিক্কা বন্দরে আসার পথে রুশ তেলবাহী জাহাজ ‘ফিউরিয়া’ মাঝপথে থমকে দাঁড়িয়েছে, তারপর ইউরোপীয় জলে ইউ-টার্ন নিয়েছে। ফলে রাশিয়া থেকে সস্তা তেলের সরবরাহ কার্যত বন্ধের মুখে।
ইন্ডিয়ান ওয়েল কর্পোরেশন জানিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে চলতে বাধ্য। ফলে রাশিয়া থেকে আগের মতো তেল আমদানি সম্ভব হচ্ছে না। মাত্র দু’সপ্তাহের ব্যবধানে দৈনিক সরবরাহ ১.৯৫ মিলিয়ন ব্যারেল থেকে নেমে এসেছে ১.১৯ মিলিয়নে। এতে দেশীয় বাজারে জ্বালানি সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার আপাতত দাম বাড়ানো থেকে বিরত থাকলেও, বিহার বিধানসভা নির্বাচনের পর পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হবে বলে অর্থনীতিবিদদের ধারণা। কারণ আন্তর্জাতিক অবরোধের ফলে কাঁচা তেলের দাম বেড়ে গেলে তার অভিঘাত পড়বে গ্যাস, পেট্রল, ডিজেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামে।
ওয়াশিংটন, মস্কো ও নয়াদিল্লির এই কূটনৈতিক ‘তেলখেলা’ শেষ পর্যন্ত যে সাধারণ মানুষের রান্নাঘরেই আগুন ধরাবে, তা এখন আর অস্বীকার করার উপায় নেই। রাশিয়ার সস্তা তেলের ভরসা কমায় দেশের অর্থনীতি ও জনগণের পকেট দু’দিকেই বাড়ছে উত্তাপ।
