
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ৭,২৮০ কোটি টাকার বিশাল বিনিয়োগে সিঁটার্ড রেয়ার আর্থ পারমানেন্ট ম্যাগনেট তৈরির প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এর লক্ষ্য বছরে ৬,০০০ মেট্রিক টন সমন্বিত উৎপাদন ক্ষমতা গড়ে তোলা, যাতে বৈদ্যুতিক যান, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি, ইলেকট্রনিক্স, প্রতিরক্ষা ও মহাকাশ– এই সব ক্ষেত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ চুম্বক দেশেই তৈরি করা যায়। বর্তমানে বিশ্ববাজারে চীনের প্রভাব অত্যন্ত বেশি, ফলে ভারত বহুবার সরবরাহ সংকটের মুখে পড়েছে। নতুন এই উদ্যোগ সেই নির্ভরতা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।
প্রকল্পটিতে পাঁচ বছরের জন্য ৬,৪৫০ কোটি টাকার বিক্রয়-উদ্দীপনা এবং ৭৫০ কোটি টাকার পুঁজি ভর্তুকি থাকবে। বিশ্বমানের প্রতিযোগিতামূলক বিডিংয়ের মাধ্যমে মোট পাঁচটি সংস্থাকে বেছে নেওয়া হবে, প্রত্যেকে সর্বোচ্চ ১,২০০ মেট্রিক টন করে উৎপাদন সক্ষমতা গড়ে তুলতে পারবে। সমস্ত অনুমোদিত ইউনিটকে সম্পূর্ণ ভ্যালু চেইন তৈরি করতে হবে রেয়ার আর্থ অক্সাইড থেকে ধাতু, তার পর মিশ্রধাতু প্রস্তুত ও শেষ পর্যন্ত ম্যাগনেট উৎপাদন। পুরো পরিকল্পনার মেয়াদ সাত বছর, যার মধ্যে প্রথম দুই বছর প্রস্তুতি ও অবকাঠামো গঠনে ব্যয় হবে, পরের পাঁচ বছর বিতরণ হবে।
সরকার মনে করছে, এই প্রকল্প আত্মনির্ভর ভারতের লক্ষ্যের সঙ্গে শক্তিশালীভাবে যুক্ত। নেট জিরো ২০৭০–এর দিশায় সবুজ প্রযুক্তির চাহিদা বাড়বে, আর সেই প্রস্তুতিই এখন থেকে শুরু করা জরুরি। দেশের মধ্যে বিরল খনিজ রিজার্ভ থাকা সত্ত্বেও উৎপাদন ক্ষমতা এতদিন কম ছিল। তাই জাতীয় ক্রিটিক্যাল মিনারেল মিশনের আওতায় ভূতাত্ত্বিক জরিপে জোর দেওয়া হয়েছে। ২০২৫ থেকে ২০৩১ সালের মধ্যে জিএসআই ১,২০০টি অনুসন্ধান প্রকল্প হাতে নেবে। উপকূল ও নদীস্রোতের বালিতে নতুন খনিজ সন্ধানে কাজ করছে অ্যাটমিক মিনারালস ডিরেক্টরেট। পাশাপাশি, আইআরইএলকে উচ্চমানের রেয়ার আর্থ অক্সাইড উৎপাদনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এই সমন্বিত প্রচেষ্টায় দেশীয় শিল্পে কর্মসংস্থান বাড়বে, সরবরাহ শৃঙ্খল মজবুত হবে এবং ভবিষ্যতের প্রযুক্তিভিত্তিক উৎপাদনে ভারতের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে।
