
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলীতে বনদপ্তরের কথিত নিপীড়নের বিরুদ্ধে অভিনব আন্দোলনে নেমেছেন শতাধিক মৎস্যজীবী। শীতের সকালে পূর্ব গড়গড়িয়া অঞ্চলে তালের ডোঙ্গা, কাঁকড়া ধরার হাঁড়ি ও জাল নিয়ে তারা রাস্তার উপর বসে শুরু করেছেন মৌন অবস্থান। অদ্ভুত এই প্রতিবাদে ধীরে ধীরে ভিড় জমছে পথচারী, গাড়ি চালক ও যাত্রীদের। যদিও চলাচলে বড় ধরনের কোনও বিঘ্ন ঘটছে না, তবুও এলাকাজুড়ে তৈরি হয়েছে তীব্র কৌতূহল।
দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরামের উদ্যোগে গড়গড়িয়া ডোঙ্গা মৎস্যজীবী সমিতির সদস্যরা জানান, পুরুষানুক্রমে সুন্দরবন-সংলগ্ন জঙ্গল থেকে মাছ, কাঁকড়া ও মধু সংগ্রহ করেই হাজার হাজার পরিবার জীবিকা চালিয়ে আসছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বনদপ্তরের নজরদারি ও চাপ বাড়ায় তাদের দৈনন্দিন জীবন কঠিন হয়ে উঠেছে। মাকড়ী নদী ও চিতুড়ি জঙ্গলে জলযান আটক করা, জরিমানার বোঝা চাপিয়ে দেওয়া এবং অতিরিক্ত শ্রমে বাধ্য করা এসব অভিযোগেই ক্ষুব্ধ এই মৎস্যজীবী সমাজ।
গত ২১ নভেম্বর শতাধিক তালের ডোঙ্গা নিয়ে কুলতলী বিট অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান তারা। সেখানে ধর্না মঞ্চ ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে এবার রাস্তায় নৌকা তুলে মৌন অবস্থানকে প্রধান আন্দোলনের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন তারা।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, জঙ্গলের পরিবেশ রক্ষা বা ম্যানগ্রোভ রোপণের মতো কাজেও তাদের নিযুক্ত করা হলেও সঠিক মজুরি মিলছে না। পরিবারে নিত্যদিনের খাদ্যের সংকট তৈরি হওয়ায় এই প্রতিবাদ তাদের কাছে বাঁচার লড়াই। দিনের আলো বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মৌন মিছিল বের হওয়ার সম্ভাবনার কথাও জানানো হয়েছে। আন্দোলন কতক্ষণ চলবে এবং প্রশাসন কী সিদ্ধান্ত নেবে এখন সেদিকেই নজর কুলতলীর বাসিন্দাদের।
