অনেকে মনে করেন, আলু খেলে ওজন বাড়ে এবং এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর, বিশেষ করে ডায়াবিটিস ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য। তবে পুষ্টিবিদদের মতে, এই ধারণা পুরোপুরি সঠিক নয়। আলুর যেমন কিছু নেতিবাচক দিক আছে, তেমনই এটি শরীরের জন্য উপকারীও হতে পারে যদি সঠিকভাবে খাওয়া হয়।
আলু ফাইবারের একটি ভালো উৎস। ফাইবার আমাদের হজমশক্তি বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে আলুর খোসায় প্রচুর ফাইবার থাকে, যা পেট পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি দীর্ঘ সময় পেট ভর্তি রাখে। ফলে বারবার খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে।
গ্যাস, অম্বল এবং বুকজ্বালার সমস্যা আজকাল অনেকেরই হয়। কাঁচা আলুর রস নিয়মিত খেলে এসব সমস্যা অনেকটাই কমে যায়। এটি হজমক্রিয়া উন্নত করে এবং পাকস্থলীর প্রদাহ কমায়।
আলুর প্রদাহনাশক গুণ রয়েছে। এটি গাঁটের ব্যথা, পেশির যন্ত্রণা এবং শরীরের বিভিন্ন প্রদাহজনিত সমস্যায় উপকারী। বিশেষ করে পেশির ব্যথা থাকলে বা দীর্ঘক্ষণ কাজ করার পর ক্লান্তি অনুভূত হলে আলু খাওয়া উপকারী হতে পারে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও আলু ভূমিকা রাখতে পারে। এতে প্রচুর পটাশিয়াম থাকে, যা হৃদযন্ত্র ও কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। নিয়মিত সঠিক পরিমাণে আলু খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং রক্তসঞ্চালন ভালো হয়।
ভিটামিন C সমৃদ্ধ হওয়ায় আলু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি সর্দি-কাশির সমস্যা কমাতে এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়তে সহায়তা করে। প্রতিদিন খালি পেটে আলুর রস খেলে শরীরের ইমিউনিটি বাড়তে পারে।
তবে আলু খাওয়ার কিছু ক্ষতিকর দিকও আছে। অতিরিক্ত আলু খেলে এটি ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে, বিশেষ করে যদি এটি ভাজা বা প্রসেসড ফর্মে খাওয়া হয়। ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বা চিপসের মতো খাবারে অতিরিক্ত তেল ও লবণ থাকায় এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। এছাড়া, উচ্চ তাপমাত্রায় আলু রান্না করলে আক্রিলামাইড নামে এক ধরনের ক্ষতিকারক যৌগ তৈরি হতে পারে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
আলুর পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে এটি সাধারণ রান্নায় ব্যবহার করাই ভালো। সেদ্ধ, বেক বা গ্রিল করে খাওয়া যেতে পারে। অতিরিক্ত পরিমাণে না খেলে এবং স্বাস্থ্যকর উপায়ে রান্না করলে আলু শরীরের জন্য উপকারী হতে পারে।