স্নিগ্ধা চৌধুরী
হলদিয়ার মাটিতে বদলে গেল রাজনৈতিক সমীকরণ! তৃণমূলের দখলে থাকা শ্রমিক সংগঠন কি এবারও ধরে রাখতে পারল পুরনো জমি? নাকি প্রগতিশীল জোটের এই বিজয় শুধু আগামীর ইঙ্গিত? প্রশ্ন উঠছে রাজ্য রাজনীতিতেও।
২৮ মার্চের নির্বাচন নিয়ে চড়ছে রাজনৈতিক পারদ। হলদিয়া ডক ইনস্টিটিউট পরিচালন সমিতির ভোটে ফের বাজিমাত করল বাম-সমর্থিত প্রগতিশীল জোট। ১৯টি আসনের মধ্যে ১৩টি দখল করে বামেরা বুঝিয়ে দিল, লড়াই এখনও বাকি! কিন্তু আরও চাঞ্চল্যকর বিষয় হল, শুভেন্দু অধিকারীর ঘাঁটিতে বিজেপির পরাজয়। শুধু হেরেছে বললে ভুল হবে, খাতা পর্যন্ত খুলতে পারেনি বিজেপি-সমর্থিত বিএমএস। এ কি শুধুই পরাজয়, নাকি এক গভীর সংকেত?
একদা তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত এই অঞ্চলে ক্রমশই দুর্বল হচ্ছে শাসকদল। এবারও আইএনটিটিইউসি মাত্র ৬টি আসন পেয়েছে। অথচ একসময় তারা এখানে ছিল অপ্রতিদ্বন্দ্বী! তাহলে কি কর্মীদের ক্ষোভ ধীরে ধীরে বামেদের দিকেই ঝুঁকছে?
বাম নেতৃত্বের দাবি, “শাসকদলের দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা কর্মচারীরা আর মেনে নিচ্ছেন না। আমরা ছিলাম, আমরা থাকব!” অন্যদিকে, তৃণমূলের বক্তব্য, “সবাই একসঙ্গে কাজ করুক, সেটাই চাই। আমাদের মধ্য়ে কোনও বিভেদ নেই।” কিন্তু এই পরাজয়ের পরেও কি দলীয় স্তরে আত্মসমীক্ষা হবে? নাকি গা ঝাড়া দিয়ে আবারও ময়দানে নামবে ঘাসফুল শিবির?
বিজেপির নীরবতা কিন্তু আরও রহস্য বাড়াচ্ছে। দলীয় নেতৃত্ব বলছে, “এই নির্বাচন বড় কিছু নয়, আমরা আগামী বিধানসভা ভোটেই এর জবাব দেব।” তবে হলদিয়ার এই ফলাফল কি শুধুই একটি বেসরকারি সমিতির নির্বাচন, নাকি এটি আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগাম বার্তা? রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ভোটের ফলাফল ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিতে পারে। তাই বামের এই উত্থানকে হালকাভাবে নেওয়ার ভুল করলে চড়া মাশুল গুনতে হতে পারে শাসকদলকে।
হলদিয়ার লাল-সবুজ আবির কি তবে ভবিষ্যতের ছবিও আঁকছে? নাকি এই উত্থান শুধুই এক অস্থায়ী সাফল্য? প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে!