ভারতের যুব সমাজের মধ্যে মাদক সেবনের বৃদ্ধি নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত মন্তব্য করেছে যে, বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই মাদক সেবনকে ‘কুল’ হিসেবে দেখে, যা খুবই চিন্তার বিষয়। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, মাদকের খপ্পড়ে পড়াটা একেবারেই ‘কুল’ নয় বরং এটি তরুণ সমাজের ভবিষ্যৎকে ধ্বংস করছে।
একটি মামলার শুনানি চলাকালীন, আদালত জানিয়েছে যে, মাদক সেবন তরুণদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থা, পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির ওপর অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিচারপতি বি ভি নাগারত্না উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, মাদক সেবনের বাড়বাড়ন্ত দেশের যুব সম্প্রদায়ের দীপ্তি বা উজ্জ্বল ভবিষ্যৎকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
মামলার প্রেক্ষাপটে, অঙ্কুশ বিপন কাপুর নামে এক যুবক মাদক পাচারের অভিযোগে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএর কাছে তদন্তাধীন ছিল। এভাবে মাদক পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকা আন্তর্জাতিক চক্রের অংশ হয়ে উঠছে যুবকরা, যা উদ্বেগের আরও একটি কারণ।
আদালত জানায়, মাদক সেবনের প্রভাব সারা দেশেই ছড়াচ্ছে এবং এর কুপ্রভাব নির্দিষ্ট কোনও বয়স, ধর্ম বা সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। বিচারপতি নাগারত্না আরও বলেন, মাদক সেবনের ফলে দেশে অরাজকতা, হিংসা এবং অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে, এমনকি মাদক পাচারের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদও ফান্ডিং পেয়ে থাকে।
আদালত দেশের যুব সমাজের মধ্যে মাদকের ব্যবহার বন্ধ করতে সকল পক্ষকে একজোট হয়ে কাজ করার পরামর্শ দেয়। অভিভাবক, সামাজিক সংস্থা, প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ এবং আইনগত সংস্থাগুলিকে একযোগে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়।
এছাড়াও, সুপ্রিম কোর্ট ‘জাতীয় আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ’ (এনএলএসএ)-কে নির্দেশ দিয়েছে যাতে তারা মাদক সেবনের বিরুদ্ধে গাইডলাইন তৈরি করে। আদালত আরও বলেন, মাদক সেবনকে ‘ট্যাবু’ হিসেবে দেখা যাবে না, বরং মাদকসেবীদের সহায়তা করা প্রয়োজন, যাতে তারা সুস্থ জীবন ফিরে পেতে পারে।
মাদক সেবনের বেড়ে চলা প্রবণতা সমাজে ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলছে, এর বিরুদ্ধে শিক্ষার প্রসার এবং কাউন্সেলিংয়ের গুরুত্বও তুলে ধরেছেন আদালত।