রবিবার প্রয়াত হলেন বিশ্বখ্যাত তবলাবাদক ওস্তাদ জাকির হুসেন। হৃদরোগ এবং ফুসফুসজনিত সমস্যা নিয়ে গত দুই সপ্তাহ ধরে সান ফ্রান্সিসকোর একটি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন তিনি। তার পরিবারও ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে গিয়েছিল তাঁর পাশে। শিল্পীর প্রয়াণের খবর নিশ্চিত করেছে তাঁর পরিবার এবং সান ফ্রান্সিসকোর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এদিন শোক প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি টুইট করে বলেন, “প্রখ্যাত ওস্তাদ জাকির হুসেনের অকাল প্রয়ানে গভীরভাবে মর্মাহত। এটি শুধু আমাদের দেশ, বরং সারা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা তাঁর লক্ষ লক্ষ ভক্তদের জন্য একটি বিশাল ক্ষতি।”
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ও জাকির হুসেনের মৃত্যুর পর একটি টুইট করেছে, যেখানে লেখা হয়, “আজ গোটা বিশ্ব হারাল এক প্রকৃত সংগীতজ্ঞকে। বিশ্ব সংগীতকে তিনি যে ছাপ ছেড়ে গিয়েছেন, তা চিরস্মরণীয়।”
এছাড়া, লেখক অসীম ছাবড়া, সাংবাদিক পারভেজ আলম এবং অন্যান্য সঙ্গীতজ্ঞরা সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর মৃত্যুর খবরের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে শোক প্রকাশ করেছেন। ইমন চক্রবর্তী তাঁর শোক বার্তায় লেখেন, “সুরলোকে বেজে ওঠে শঙ্খ… ওস্তাদ জাকির হুসেন।”
১৯৫১ সালের ৯ মার্চ মুম্বইয়ের মাহিমে জন্মগ্রহণ করা জাকির হুসেন শৈশবেই তবলার প্রতি আগ্রহী হন। মাত্র ৩ বছর বয়সে মৃদং বাজানো শেখেন এবং ১২ বছর বয়সে প্রথম কনসার্টে পারফর্ম করেন। তাঁর অবদান ছিল কেবল তবলাবাদক হিসেবে নয়, তিনি সুরকার ও সঙ্গীত প্রযোজক হিসেবেও দুনিয়া জুড়ে জনপ্রিয়।
এছাড়াও, এই বছর তিনি তিনটি গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড জিতেছিলেন। তাঁর লম্বা সঙ্গীত জীবনে তিনি পদ্মভূষণ, পদ্মশ্রী, এবং সঙ্গীত নাটক আকাদেমি পুরস্কারের মতো বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
ওস্তাদ জাকির হুসেনের মৃত্যু বাংলা ও ভারতীয় সঙ্গীত জগতের জন্য এক বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি করেছে। তাঁর অনুরাগীরা এবং সঙ্গীতপ্রেমীরা চিরকাল মনে রাখবেন এই কিংবদন্তী শিল্পীকে।