দ্বিতীয়বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরই জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার বাতিলের নির্বাহী নির্দেশিকা জারি করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ওয়াশিংটন প্রদেশের আদালতে দায়ের হওয়া মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সিয়াটলের জেলা জজ জন কফেন এই নির্দেশিকাকে ‘অসাংবিধানিক’ ঘোষণা করে সাময়িক স্থগিতাদেশ দেন।
ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানদের মার্কিন নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার থাকবে না। এমনকি, বৈধ অভিবাসী হলেও যদি বাবা-মায়ের একজন স্থায়ী বাসিন্দা না হন, তাহলে তাঁদের সন্তানও নাগরিকত্ব পাবে না। স্টুডেন্ট, ওয়ার্ক বা টুরিস্ট ভিসায় জন্ম নেওয়া শিশুরাও নতুন নিয়মের অধীনে নাগরিকত্ব হারাবে। ট্রাম্পের নির্দেশিকাটি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল ২০২৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে।
ডেমোক্র্যাট শাসিত রাজ্যগুলি ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়। তারা যুক্তি দেয়, এটি মার্কিন সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর সরাসরি লঙ্ঘন। সুপ্রিম কোর্ট অতীতে একাধিকবার রায় দিয়েছে যে মার্কিন ভূখণ্ডে জন্ম নেওয়া শিশুরা নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার রাখে, তা তাদের বাবা-মায়ের অভিবাসন স্ট্যাটাস যাই হোক না কেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার প্রায় ১৫০ বছর ধরে প্রচলিত। পরিসংখ্যান বলছে, মেক্সিকান বংশোদ্ভূতরা নাগরিকত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছেন। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা। ২০২২ সালে ৬৫,৯৬০ জন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকত্ব পান।
বর্তমানে, আমেরিকায় বসবাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের প্রায় ৪২ শতাংশ নতুন নিয়মের কারণে নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্যতা হারাতে পারে। ২০২৩ সাল পর্যন্ত ২ কোটি ৯০ হাজার ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন গ্রিন কার্ডধারী হিসেবে লিগ্যাল পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি (এলপিআর) পেয়েছেন।
এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে রাজনৈতিক বিতর্ক তীব্র আকার ধারণ করেছে। ডেমোক্র্যাটদের দাবি, ট্রাম্পের পদক্ষেপ অভিবাসননীতি এবং মানবাধিকারের জন্য বিপজ্জনক।