আজ ভারতের অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের দিশা নির্ধারণ করতে সংসদে পৌঁছলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। লাগাতার অষ্টমবার বাজেট পেশ করতে চলেছেন তিনি। কিন্তু শুধু তাঁর বাজেটই নয়, আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে তাঁর শাড়িও। এবারের বাজেট বক্তৃতার সময় তিনি পরেছেন ক্রিম রঙের শাড়ি, যার সোনালি পাড় আর মধুবনি চিত্রশিল্পের নিদর্শন যেন এক বিশেষ বার্তা বহন করছে। রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, এই শাড়ির মাধ্যমে কোনও নির্দিষ্ট রাজ্যের প্রতি ইঙ্গিত দিচ্ছেন কি নির্মলা? পূর্বেও দেখা গিয়েছে, যেখানে নির্বাচন আসন্ন, বাজেটে সেই রাজ্যের বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। তাই এবারও কি কোনও নির্দিষ্ট অঞ্চলের মন জয় করতেই এই শাড়ির ব্যবহার?
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গতকালের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যে মধ্যবিত্তদের প্রত্যাশা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। আয়কর স্ল্যাব পরিবর্তন, মূলধনী ব্যয়ের বরাদ্দ বৃদ্ধি—এই দুই দিকেই নজর রয়েছে কয়েক কোটি মানুষের। সকাল থেকেই শেয়ার বাজারের ওঠানামা তা-ই ইঙ্গিত দিচ্ছে। বাজার খোলার পরপরই সেনসেক্স ৩০০ পয়েন্ট উপরে ওঠে, যদিও পরে কিছুটা পড়ে যায়। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এবার নির্মলার বাজেটে কাঠামোগত সংস্কারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ থাকতে পারে, বিশেষত রপ্তানি খাতে সরকারি সহায়তা বৃদ্ধির বিষয়টি গুরুত্ব পেতে পারে।
সংসদে বাজেট পেশের আগে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করেন অর্থমন্ত্রী। এরপর ট্রাকে করে বাজেট নথি পৌঁছয় সংসদে, যা নিয়ে কৌতূহল চরমে। এই মুহূর্তে দেশে মূল্যস্ফীতি বড় সমস্যা, চাকরির বাজারেও স্থবিরতা। রবার্ট বঢরা যেমন বলেছেন, সরকারের কাছ থেকে প্রত্যাশা কম। তেমনই কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার দাবি, কেন্দ্রীয় বাজেট যেন সব রাজ্যের প্রতি সমান মনোযোগ দেয়।
এদিকে অর্থনৈতিক সমীক্ষা বলছে, দীর্ঘ কাজের সময় শরীর ও মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে, যা কর্মসংস্কৃতির ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে। খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতিও উদ্বেগজনক, যার সমাধানে ভারতকে জলবায়ু-সহনশীল কৃষিতে মনোযোগী হতে হবে। সোনার দামে পতনের ইঙ্গিতও মিলেছে, যদিও রুপোর দাম বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
বাজেট বক্তৃতার আগে নির্মলা সীতারামন ঐতিহ্যবাহী ‘বাজেট পোজ’ দিয়েছেন, হাতে লাল কভারের ট্যাব। তাঁর এই হাসিমুখের আত্মবিশ্বাস কি মধ্যবিত্তদের জন্য সুখবরের ইঙ্গিত? কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেই উত্তর মিলবে। দেশজুড়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী, বিনিয়োগকারী—প্রত্যেকেই। এই বাজেট কি আশার আলো দেখাবে, নাকি আরও একবার নিরাশ করবে? উত্তর মিলবে সংসদের অধিবেশনে।