মহাকুম্ভে পদপিষ্ঠ হয়ে মৃত্যুমিছিল! প্রথমবার আঙুল উঠলনা ইসলামধর্মের দিকে
খুন, রাহাজানি থেকে শুরু করে রাম নবমী কিংবা হনুমানজয়ন্তীতে হামলা! সন্ত্রাসের ঘটনা মানেই প্রথমেই অভিযোগের আঙুল ওঠে এক বিশেষ ধর্মাবলম্বী মানুষদের দিকে। বলতে পারেন, কোন ধর্মের কথা এখানে বলা হচ্ছে? ইসলাম ধর্ম! হ্যাঁ, এই দেশে সংখ্যালঘু বলেই হোক কিংবা আপাতদৃষ্টিতে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ আর পাকিস্তানে সংখ্যাগুরু হওয়ার কারণেই হোক, হামলার ঘটনা মানেই অভিযোগের তীর এদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দিকে আগে ছুড়ে দেওয়ার দীর্ঘদিনের ট্রেন্ড। তাহলে মহাকুম্ভের মর্মান্তিক “মহানির্বাণের” ঘটনায় হাত কার? কিছু সত্যি আজ স্পষ্ট করা আশু প্রয়োজন। তার আগে চোখের পড়ে থাকার ধর্মের ঠুলি খুলে প্রতিবেদনে চোখ রাখুন।
মৌনী অমাবস্যার দ্বিতীয় শাহিস্নানের দিনে মহকুম্ভে পদপিষ্ঠ হওয়ার ঘটনায় স্তব্ধ দেশ। ভক্তদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। ৩০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে, আহত ৬০ জন! বেসরকারি ভাবে সংখ্যাটা আরোও বেশি! স্বাভাবিকভাবেই সমাজের নানা অংশ প্রশ তুলতে শুরু করেছে সরকারের কদর্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে। শুধু কি তাই? অনেকে মহাকুম্ভেপূণ্য স্নান করতে যাওয়ার এই “হিড়িক”কে দুরছাই করে ‘অন্ধ ধর্ম বিশ্বাস’ বলেও কটাক্ষ করে চলেছেন। “অন্ধবিশ্বাস” বলবেন নাকি, “বিশ্বাসে মিলায় বস্তু” বলে মহাকুম্ভযাত্রীদের সঙ্গে সঙ্গ দেবেন সেটা আপনার ব্যাপার।
ঘটনার ঘনঘটা নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই। কিন্তু, যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গেল তার দায় কার? আঙুল তুলতে হবে সরকারের ব্যবস্থাপনার দিকে! মৌনি অমাবস্যার ভয়াবহতা ভুলে ফের নবরূপে সেজে উঠতে শুরু করেছে মহাকুম্ভ। বসন্ত পঞ্চমীর অমৃতস্নান আসন্ন। অমৃতস্নানে যাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কোনও ত্রুটি না থাকে, তার জন্য প্রস্তুতি আগে থেকেই শুরু করে দিয়েছে যোগী সরকার। বেশি ভিড় হয় এমন জায়গায় বাড়তি নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হবে। ব্যারিকেড সংলগ্ন অঞ্চলের নিরাপত্তায় এসপি পদমর্যাদার আধিকারিকদের রাখা হবে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব মনোজ কুমার সিং ও ডিজিপি প্রশান্ত কুমার প্রয়াগরাজে গিয়ে গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। আগামী অমৃতস্নানে এহেন ঘটনা যাতে না ঘটে সেটাই নিশ্চিত করা মূল লক্ষ্য যোগী সরকারের।
কিন্তু সব ক্ষেত্রে অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে কেন ব্যবস্থাপনায় জোর দেওয়া হবে? প্রশ্ন করুন! আগে থেকেই যদি এমন তৎপরতা দেখানো হতো তাহলে প্রানগুলো বেঁচে যেত বইকি। গত দেড় বছর ধরে নাকি মহাকুম্ভের প্রস্তুতিপর্ব চলেছে। সবাই নাকি তারিফ করছে যোগী সরকারের। তার প্রমাণ কি এই একের পর এক মর্মান্তিক মৃত্যু নাকি, পরিবারের সদস্যদের খুঁজতে গিয়ে পাগলপারা অবস্থা বাকিদের!
কার দিকে তুলবেন অভিযোগের আঙুল? কোন ধর্মাবলম্বী মানুষদের দিকে? তীর্থযাত্রার মৃত্যু পবিত্র মৃত্যু বলে এড়িয়ে যাবেন নাকি? ধর্মে যাদের অগাধ বিশ্বাস প্রশ্নটা সেই মানুষগুলোর দিকে। প্রশ্নটা তাঁদের জন্য, যাঁরা অপরাধীরও ধর্ম খোঁজেন! বলে রাখি, বিশ্বাস যতটা ভালো ভালো, কিন্তু অন্ধবিশ্বাস তার চেয়েও সাংঘাতিক ভয়ঙ্কর! তাই “তীর্থযাত্রার মৃত্যু পবিত্র মৃত্যু” বলে এড়িয়ে যাবেন না। না, এড়িয়ে যাবেন না!