মধুর কণ্ঠে শুরু, সর্বনাশে শেষ। ফোনের ওপাড় থেকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে সরকারি কর্মীদের সর্বস্ব লুট করত একটি সংঘবদ্ধ চক্র। মূলত পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া সহ একাধিক জায়গায় এই প্রতারণার ঘটনা সামনে আসতে থাকে। অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে নামে পুলিশ, যা চাঞ্চল্যকর মোড় নেয় দমদমে।
ফোন ধরলেই ওপার থেকে ভেসে আসত মিষ্টি গলা—”একাকিত্বে ভুগছেন? বন্ধুত্ব করব?” কেউ শুনেই ফোন কেটে দিতেন, কিন্তু কেউ ফাঁদে পা দিলেই সর্বনাশ। ধাপে ধাপে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হত তাঁদের কাছ থেকে। একাধিক সরকারি কর্মী এই ফাঁদে পড়েছেন বলে অভিযোগ।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, চক্রের মূল ঘাঁটি পূর্ব মেদিনীপুরে হলেও, এর অফিস চালানো হত দমদম থেকে। সোমবার, পাঁশকুড়া থানার সাইবার ক্রাইম টিম এবং ব্যারাকপুর কমিশনারেটের দমদম থানার পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে মতিলাল কলোনিতে একটি বাড়ি চিহ্নিত করে। সেখানেই চলত প্রতারণার ব্যবসা। কিন্তু এখানেই সবথেকে চমকপ্রদ তথ্য সামনে আসে—এই বাড়িটি ভাড়া দিয়েছিলেন এক পুলিশ আধিকারিক!
জানা গেছে, নিরুপম চট্টোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তি বাড়িটি ভাড়া দিয়েছিলেন। পেশায় তিনি ট্রাফিক পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এখানে প্রায়ই অল্পবয়সি ছেলেমেয়েদের আনাগোনা ছিল। অনেকে ভেবেছিলেন, তারা চাকরির খোঁজে আসছে। কিন্তু আদতে চলছিল অন্য কিছু।
এই ঘটনার পর দমদমে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কীভাবে একজন পুলিশ আধিকারিক নিজের বাড়ি ভাড়া দিয়ে এমন প্রতারণার আখড়া চালাতে দিলেন, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।