সকালে ঘুম থেকে উঠে কিছুতেই শরীর তুলতে ইচ্ছা করছে না? সারা শরীর জুড়ে অসম্ভব ক্লান্তি? ছোটখাটো বিষয় ভুলে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত? জীবনের প্রতি এক অদ্ভুত অনীহা গ্রাস করেছে? এই লক্ষণগুলির সঙ্গে আত্মহত্যার প্রবণতার কোনও যোগসূত্র থাকতে পারে কি? সাম্প্রতিক এক গবেষণা অন্তত তেমনটাই বলছে।
আমেরিকার মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। গবেষকদের দাবি, শরীরে ‘ভিটামিন D’-এর ঘাটতি আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাদের সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৬০% আত্মহত্যার ঘটনার পেছনে রয়েছে ভিটামিন D-এর অভাব। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক লেনা ব্রুনডিন জানিয়েছেন, “রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে সহজেই ভিটামিন D-এর মাত্রা নির্ধারণ করা সম্ভব। ভবিষ্যতে মানসিক রোগীদের চিকিৎসায় এটি বড় ভূমিকা নিতে পারে।”
তবে এই গবেষণাকে নিখুঁত প্রমাণ বলে মানতে নারাজ অনেক বিশেষজ্ঞ। কলকাতার বিশিষ্ট মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ সুজিত সরখেল জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালকে জানিয়েছেন, “ভিটামিন D কম থাকলে ডিপ্রেশন বা মানসিক অবসাদ দেখা দিতে পারে, এটি ঠিক। তবে শুধুমাত্র ভিটামিন D-এর অভাবে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে, এমনটা বলার সময় এখনো আসেনি।”
গবেষণাটি হয়েছে মাত্র ৫৯ জন আত্মহত্যাপ্রবণ ব্যক্তির উপর। এত কম সংখ্যক অংশগ্রহণকারীর উপর ভিত্তি করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত টানা যায় না বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। তাছাড়া মানসিক অবসাদ বা আত্মহত্যার পেছনে একাধিক কারণ থাকে— সামাজিক, পারিবারিক, জিনগত বা হরমোনজনিত। সুতরাং শুধুমাত্র ভিটামিন D-এর অভাবকেই আত্মহত্যার মূল কারণ হিসাবে ধরে নেওয়া ঠিক নয়।
তবে গবেষকরা বলছেন, শরীরে ভিটামিন D-এর সঠিক মাত্রা বজায় রাখলে মানসিক সুস্থতা কিছুটা নিশ্চিত করা সম্ভব। রোদে পর্যাপ্ত সময় কাটানো, ভিটামিন D সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া হতে পারে মানসিক সুস্থতার অন্যতম চাবিকাঠি।