নিউ ইয়র্কে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই আলোচনার ফলে ভারত পেল একাধিক কূটনৈতিক ও প্রতিরক্ষা সুবিধা। সবচেয়ে বড়ো সিদ্ধান্ত হিসেবে ২৬/১১ মুম্বই হামলার মূল চক্রী তাহাউর রানার প্রত্যর্পণের অনুমতি দিয়েছে আমেরিকা। পাশাপাশি প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে ভারত-আমেরিকা সহযোগিতার নতুন অধ্যায় সূচিত হল।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে আমেরিকা তাহাউর রানাকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক রানা লস্কর-ই-তইবাকে সহায়তা করার দায়ে আমেরিকায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। এবার তাঁকে ভারতের আদালতে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বসিত শহিদ ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রার পরিবার।
প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারত বড়ো লাভবান হচ্ছে এই বৈঠকের ফলে। আমেরিকা ভারতের প্রতিরক্ষা শক্তি আরও মজবুত করতে অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান দিচ্ছে। এছাড়াও ট্যাঙ্করোধী ‘জ্যাভলিন’ ক্ষেপণাস্ত্র-সহ একাধিক সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে এই চুক্তি ভারতকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও বড়ো সিদ্ধান্ত এসেছে মোদী-ট্রাম্প বৈঠক থেকে। দুই দেশের মধ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ৫০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে। বিশেষ বাণিজ্য চুক্তির আওতায় ভারত-আমেরিকা বাণিজ্যপথ ইজ়রায়েল ও ইটালির সঙ্গে সংযুক্ত হবে। সড়ক, রেল এবং সমুদ্রপথে বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে।
ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যার সমাধানে হস্তক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন ট্রাম্প। সীমান্তে সংঘর্ষের অবসান ঘটানোর জন্য তিনি প্রয়োজনে মধ্যস্থতা করবেন বলেও জানিয়েছেন। তাঁর মতে, ‘এ ধরনের সংঘর্ষ বন্ধ হওয়া দরকার, আমি সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।’
পরমাণু শক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতার ক্ষেত্রেও নতুন দিগন্ত খুলেছে এই বৈঠকে। ২০০৮ সালের পারমাণবিক চুক্তির আওতায় ভারতে নতুন পরমাণু চুল্লি নির্মাণের পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ‘পরমাণু শক্তি মিশন’ ঘোষণা করার পর, ট্রাম্পের বার্তাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এই বৈঠকের মাধ্যমে ভারত কূটনৈতিক, প্রতিরক্ষা ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বড়ো মাইলফলক স্পর্শ করল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।