ডায়াবেটিস সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা হলো, মিষ্টি খেলেই এই রোগ হয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি একটি ভ্রান্ত ধারণা। ডায়াবেটিসের মূল কারণ রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি, যা শুধুমাত্র মিষ্টি খাওয়ার ফলে হয় না। বরং বংশগত কারণ, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাবসহ বিভিন্ন বিষয় ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিস প্রধানত দুই ধরনের হয়: টাইপ ১ এবং টাইপ ২। টাইপ ১ ডায়াবেটিসে শরীর ইনসুলিন তৈরি করতে অক্ষম, যা সাধারণত বংশগত বা অটোইমিউন কারণে ঘটে। টাইপ ২ ডায়াবেটিসে শরীর ইনসুলিন তৈরি করলেও তা সঠিকভাবে কাজ করে না, যা স্থূলতা, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাবে ঘটে।
মিষ্টি খাওয়া এবং ডায়াবেটিসের সম্পর্ক নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন, অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়া সরাসরি ডায়াবেটিসের কারণ নয়। তবে অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণের ফলে ওজন বৃদ্ধি পায়, যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই পরিমিত পরিমাণে মিষ্টি খাওয়া যেতে পারে, তবে সুষম খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম বজায় রাখা জরুরি।
ডায়াবেটিস নিয়ে আরও কিছু ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। অনেকে মনে করেন, ডায়াবেটিস শুধু বয়স্কদের হয়। তবে বাস্তবে, যেকোনো বয়সে ডায়াবেটিস হতে পারে। বিশেষ করে টাইপ ১ ডায়াবেটিস শিশু ও কিশোরদের মধ্যেও দেখা যায়। এছাড়া, অনেকে মনে করেন ডায়াবেটিস ছোঁয়াচে রোগ, যা সঠিক নয়। ডায়াবেটিস কোনো সংক্রামক রোগ নয় এবং এটি একজন থেকে আরেকজনে ছড়ায় না।
সঠিক তথ্য ও সচেতনতার মাধ্যমে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। সুষম খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ডায়াবেটিস মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভ্রান্ত ধারণা পরিহার করে সঠিক জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।