ভারতে ডিজিটাল ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন (ডিজিটাল পার্সোনাল ডেটা প্রোটেকশন অ্যাক্ট) ২০২৩ কার্যকর হয়েছে। এই আইনে ১৮ বছরের কম বয়সি কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্ট খুলতে চাইলে অভিভাবকের অনুমতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে শুধু আইন করলেই সমস্যার সমাধান হবে না, প্রয়োজন সচেতনতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণ।
বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি আসক্তি একপ্রকার সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। অল্প বয়সিরা মোবাইল স্ক্রিনে এতটাই ডুবে যাচ্ছে যে বাস্তব জীবনের সঙ্গে তাদের সংযোগ প্রায় হারিয়ে যাচ্ছে। পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে কাটানোর সময়টুকুও এখন মোবাইল স্ক্রিনেই সীমাবদ্ধ। রাত জেগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যস্ত থাকার ফলে ঘুমের অভাব, একাকীত্ব, মানসিক চাপ ও পড়াশোনায় খারাপ ফলাফলের মতো সমস্যা বাড়ছে।
তবে একেবারে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিচার করলে চলবে না। সোশ্যাল মিডিয়ার ইতিবাচক দিকও আছে। অনেকে অনলাইন কোর্স, ডিজিটাল মার্কেটিং, কনটেন্ট ক্রিয়েশন ইত্যাদির মাধ্যমে ক্যারিয়ার গড়ছে ও অর্থ উপার্জন করছে। সোশ্যাল মিডিয়া যোগাযোগ ও তথ্য সংগ্রহের সহজতম মাধ্যম হলেও এটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভারসাম্য রাখা জরুরি।
সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তি কমাতে নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করা, স্ক্রিন টাইম কমানো, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে বেশি সময় কাটানো, সপ্তাহে অন্তত একদিন ডিজিটাল ডিটক্স নেওয়া, এবং বিনোদনের বদলে শিক্ষামূলক ও উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগানো যেতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়ার অন্ধকার দিক যতটা ভয়ানক, এর ইতিবাচক দিকও ততটাই কার্যকর হতে পারে যদি এটি সচেতনভাবে ব্যবহার করা হয়। সমাজের সুস্থ বিকাশের জন্য প্রয়োজন দায়িত্বশীল আচরণ ও আত্মনিয়ন্ত্রণ।