ডিম দীর্ঘদিন ধরে পুষ্টিকর খাবার হিসেবে পরিচিত। কিন্তু কিছু গবেষণা দাবি করেছিল, অতিরিক্ত ডিম খেলে হৃদ্রোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়তে পারে। সাম্প্রতিক গবেষণা এই ধারণার সত্যতা কতটুকু নিশ্চিত করছে?
নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন একটি ডিম খাওয়া হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। ২০১৮ সালে ‘হার্ট’ জার্নালে প্রকাশিত চীনের প্রায় পাঁচ লাখ প্রাপ্তবয়স্কের ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন অন্তত একটি ডিম খান, তাদের হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি ১৮ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে। গবেষকরা বলছেন, ডিমে থাকা উচ্চমাত্রার প্রোটিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
অন্যদিকে, ২০১৯ সালে ‘জার্নাল অব দ্য আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (JAMA)’-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, যারা প্রতিদিন দুটির বেশি ডিম খান, তাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, যা হার্টের জন্য ক্ষতিকর। এতে আরও বলা হয়েছে, অতিরিক্ত ডিম খাওয়ার ফলে হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি ১৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।
একটি মাঝারি আকারের ডিমে প্রায় ছয় গ্রাম উচ্চ মানের প্রোটিন থাকে। এছাড়া ডিমে রয়েছে ভিটামিন এ, বি১২, ডি, ই, ফলিক অ্যাসিড, আয়রন, জিঙ্ক এবং কোলিনের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা শরীরের পেশি গঠনে, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে এবং রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সুস্থ ব্যক্তিদের জন্য দিনে একটি ডিম নিরাপদ এবং তা হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে। তবে যারা উচ্চ কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস বা হৃদ্রোগে আক্রান্ত, তাদের জন্য অতিরিক্ত ডিম খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। অনেক চিকিৎসকই ডিমের সাদা অংশ খাওয়ার পরামর্শ দেন, কারণ এতে কোলেস্টেরলের মাত্রা কম থাকে এবং প্রোটিন বেশি পাওয়া যায়।
গবেষকরা বলছেন, ডিম খাওয়ার পদ্ধতিও গুরুত্বপূর্ণ। ভাজা ডিম বা অতিরিক্ত মশলা দিয়ে রান্না করা ডিমের চেয়ে সেদ্ধ ডিম বেশি স্বাস্থ্যকর। তাই পরিমিত ডিম খাওয়ার পাশাপাশি সুস্থ জীবনযাপনের দিকেও নজর দেওয়া দরকার।