বুদ্ধদেব পাত্র
বাংলার বুকে প্রথম নাইট ম্যারাথন, তাও আবার জল জঙ্গল ঘেরা দুর্গম অযোধ্যা পাহাড়ের চূড়ায়। আগামী ২২ফেব্রুয়ারি অযোধ্যা পাহাড়ের চূড়ায় ১৪ কিলোমিটার হবে নাইট ম্যারাথন। পাহাড়ের এই নাইট ম্যারাথন ঘিরে সাজো সাজো রব জঙ্গলমহলের জেলায়। টলিউডের কলাকুশলী থেকে প্রখ্যাত সব ক্রীড়াবিদরা, অযোধ্যা পাহাড়ের নাইট ম্যারাথন সফল করতে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন। জেলা সদর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম,প্রতিটি প্রান্তে “রান ফর অ্যাডভেঞ্চার, রান ফর নেচার”স্লোগানে চলছে প্রচার।
পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান। জেলার পর্যটনকে প্রমোট করতেই এই নাইট ম্যারাথনের আয়োজন
পাশাপাশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে পুরুলিয়ার লোকসংস্কৃতি ছৌ,ভাদু টুসু,নাটুয়া করম নৃত্যকে।
এক সময় মাওবাদীদের আঁতুড় ঘরের পরিচিতি পেয়েছিল অযোধ্যা পাহাড়। ২০০৬ -২০১১সাল। পাহাড়ের প্রায় ৮০টি গ্রামে ছিল মাওবাদীদের অবাধ যাতায়াত। একদিকে পুলিশ, সিআরপিএফ, কোবরা বাহিনী, অন্য প্রান্তে মাওবাদিরা। ভারী বুটের আওয়াজ আর বারুদের কটু গন্ধে স্তব্ধ হয়ে গেছিল সাল পলাশের অযোধ্যা পাহাড়। সাদা কাগজে লাল কালিতে মাওবাদী ফতোয়া ,কোথাও ল্যান্ডমাইন খুনোখুনি ছিল নিত্য নৈমন্তিক ব্যাপার। ২০১১ এর বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসতেই ধীরে ধীরে শান্ত হয় সমগ্র জঙ্গলমহল সহ অযোধ্যা পাহাড়। একসময়ের বন্ধ হয়ে যাওয়া সরকারি অতিথি নিবাস আবার তালা খুলতে শুরু করে। পাহাড়ের হিলটপ থেকে প্রতিটি প্রান্তে প্রচুর হোটেল রিসোর্ট তৈরি হয়। এখন এখন মাও আতঙ্ক কাটিয়ে পর্যটনের সেরা ডেসটিনিশন অযোধ্যা পাহাড়। সেই অযোধ্যা পাহাড়েই শ পুরুলিয়া পুলিশ আয়োজন করছে নাইট ম্যারাথন। অযোধ্যা পাহাড়ের হিল টপ থেকে আপার ড্যাম আবার আপার ড্যাম থেকে হিলটপ। মোট ১৪ কিলোমিটার হবে ম্যারাথন রেশ।বাংলার বুকে হওয়া প্রথম এই নাইট ম্যারাথনকে সফল করতে চ্যালেঞ্জে নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। ইতিমধ্যে নাইট ম্যারাথনের ভিডিও লঞ্চ করেছে পুরুলিয়া পুলিশ। চলছে জোর প্রচার। নাইট ম্যারাথনের প্রচারে বুধবার পড়ন্ত বিকেলে পুরুলিয়া শহরে ছৌ নৃত্য ব্যান্ড পার্টি সহ বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করে পুরুলিয়া পুলিশ। র্যালিতে হাঁটেন পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহ রায়,ডেপুটি পুলিশ সুপার শৃঙ্খলা এবং প্রশিক্ষণ শাশ্বতী শ্বেতা সামন্ত সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা। র্যালিতে উপস্থিত থেকে এই নাইট ম্যারাথনকে সফল করতে বার্তা দেন পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।তিনি জানান সামাজিক সচেতনতার পাশাপাশি পুরুলিয়ার ছৌ, ঝুমুর,নাটুয়া, ভাদু টুসু সহ পুরুলিয়ার লোকসংস্কৃতিকেও প্রমোট করা হবে এই নাইট ম্যারাথনে। তাই লোকসংস্কৃতি নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা আছে পাহাড়ের চূড়ায়। সব মিলিয়ে বাংলার বুকে হওয়া অযোধ্যা পাহাড়ের নাইট ম্যারাথনকে ঘিরে ব্যাপক উন্মাদনা জেলায়।