প্রতি বছর কুম্ভমেলায় লক্ষ লক্ষ মানুষ গঙ্গায় স্নান করেন, বিশ্বাস করেন এতে তাঁদের পাপ ধুয়ে যাবে। তবে বিজ্ঞান বলছে, এই জল শুধুমাত্র পবিত্র নয়, বরং অত্যন্ত দূষিতও। সম্প্রতি উত্তর প্রদেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (UPPCB) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, প্রয়াগরাজের গঙ্গা নদীর জল স্নানের জন্যও নিরাপদ নয়, কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া রয়েছে।
সরকার গঙ্গার পানি পরিশুদ্ধ করতে কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে, কিন্তু বাস্তবে তার সুফল মেলেনি। গবেষণা বলছে, জানুয়ারিতে প্রয়াগরাজের গঙ্গায় ব্যাকটেরিয়ার মাত্রা অনুমোদিত সীমার ৩৫-৪০ গুণ বেশি ছিল। এটি মূলত মানব ও পশুর মলমূত্র থেকে আসা ব্যাকটেরিয়া, যা জলবাহিত রোগের কারণ হতে পারে।
ডাক্তারদের মতে, এই দূষিত জল শরীরে প্রবেশ করলে ডায়রিয়া, আমাশয় এবং অন্যান্য সংক্রামক রোগ ছড়াতে পারে। এছাড়া, গঙ্গার জল ব্যবহারের উপযোগী কি না, তা নির্ধারণের জন্য ব্যবহৃত জৈব রাসায়নিক অক্সিজেন চাহিদা (BOD) পরীক্ষায় দেখা গেছে, কিছু ক্ষেত্রে জলীয় জীবের জন্যও এই জল ক্ষতিকর হতে পারে।
ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত রিপোর্টে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে, কারণ কুম্ভমেলার শেষের দিকে নদীর জল কালো হয়ে গেছে। যদিও কিছু জায়গায় জলের মান পূর্বের তুলনায় ভালো হয়েছে, কিন্তু তা এখনও স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
তাই প্রশ্ন থেকেই যায়— ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে কোটি কোটি মানুষ গঙ্গায় স্নান করছেন, কিন্তু তাঁরা কি আদৌ সচেতন যে, এই জল তাঁদের পাপ ধোয়ার বদলে নতুন রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে?