হাওড়ার ঘোষপাড়া পেট্রোল পাম্পের কাছে রহস্যজনক গুলিকাণ্ড ঘিরে নতুন তথ্য সামনে আসছে। চণ্ডীতলা থানার ওসি জয়ন্ত পাল গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তদন্তে উঠে এসেছে একাধিক চাঞ্চল্যকর বিষয়।
তদন্তকারী বিশেষ টিম জানিয়েছে, জয়ন্ত পালের শরীরে পাওয়া গুলি তার সার্ভিস রিভলবার থেকে ছোড়া হয়নি। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে ৭এমএম গুলির খোল, যা পুলিশি অস্ত্র নয়। একই সঙ্গে, জয়ন্ত পালের গাড়ি থেকে মদ, সেক্স টয় ও কন্ডোম উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের শীর্ষ মহল বিষয়টিকে অত্যন্ত গম্ভীরভাবে দেখছে।
এই রহস্য উদ্ঘাটনে চণ্ডীতলা থানায় বিশেষ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম গঠন করা হয়েছে। টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কৃষানু রায়, চণ্ডীতলার এসডিপিও তমাল সরকার, সার্কেল ইন্সপেক্টর সন্দীপ গাঙ্গুলি-সহ এক মহিলা পুলিশ অফিসার। সোমবার সন্ধ্যায় এক ঘণ্টার বৈঠক হয়, যেখানে নানা দিক পর্যালোচনা করা হয়।
তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, জয়ন্ত পাল নিজের থানা এলাকার বাইরে যাওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে, যে পিস্তল থেকে গুলি ছোড়া হয়েছে, সেটি কার, তাও খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ।
সূত্রের খবর, জয়ন্ত পাল একটি পানশালা চালাতেন, যেখানে অন্য জেলার পুলিশ অফিসারদেরও যাতায়াত ছিল। ঘটনাস্থলে থাকা এক রহস্যময়ী মহিলার সঙ্গেও তার সম্পর্কের কথা উঠে আসছে। যদিও ওই মহিলার পরিবার দাবি করেছে, জয়ন্ত পালের সঙ্গে তাদের কোনও পরিচয় নেই।
এই ঘটনায় পুলিশ বিভাগের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জয়ন্ত পালের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে এবং দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কড়া শাস্তি হতে পারে। তদন্তকারীরা মনে করছেন, এই গুলিকাণ্ডের পেছনে আরও গভীর ষড়যন্ত্র থাকতে পারে।
সকলের নজর এখন পুলিশের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে। গুলি চলার কারণ, পানশালার যোগসাজশ এবং সেই রহস্যময়ীর ভূমিকা—সব মিলিয়ে এই কেস আরও জটিল হয়ে উঠছে।