সমীর ঘোষের কলমে
মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ককে বাংলাদেশে আগামী ৩ মাসের মধ্যে স্টারলিংক পরিসেবা চালু করার প্রস্তাব দিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পাশাপাশি ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণও জানিয়েছেন তিনি।বাংলাদেশের প্রথম আলো সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা স্টারলিংকের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। শুধু তাই নয় ১৯ ফেব্রুয়ারিতে তিনি একটা আনুষ্ঠানিক চিঠিও পাঠান ড. ইউনূস।জানা যাচ্ছে তাতে তিনি বাংলাদেশে স্টারলিংকের সেবার উপযোগিতার বিষয়টি তুলে ধরেন। জানা যাচ্ছে দেশে দ্রুত স্টারলিংকের পরিষেবা চালুর উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস তার বিশেষ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমানকে মাস্কের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার দায়িত্ব দিয়েছেন।
বাংলাদেশে স্টারলিংককে আনার চেষ্টার এই খবরে জল্পনা শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে।কারণ ইলন মাস্ক কেবল মাত্র একজন ব্যবসায়ী বা মার্কিন ধনকুবের নন। তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং ট্রাম্প প্রশাসনের সরকারি দক্ষতা বিভাগের (ডিওজিই) প্রধান। কাজেই তার সঙ্গে কাজ বা সখ্যতার অর্থ ট্রাম্প প্রশাসনের অনেকটা সুনজরেই থাকা।বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের বিদায়ের নেপথ্যে আমেরিকার হাত নেই বলে সম্প্রতি দাবি করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আবার বাংলাদেশের রাজনৈতিক ‘দৃশ্যপট শক্তিশালী’ করতে আমেরিকা ২৯ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে বলে জানিয়েছে ইলন মাস্কের ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি।এই নিয়ে সরব হয়ে বাংলাদেশের জন্যে বরাদ্দ এই অনুদান বন্ধ করা হবে বলে তোপ দেগেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।এমন পরিস্থিতিতে ইলন মাস্ককে বাংলাদেশে আমন্ত্রনের পাশাপাশি স্টারলিংককে আনার চেষ্টাকে গুরুত্ব দিয়েই ভাবছে বিভিন্ন মহল।
তবে ১৯ ফেব্রুয়ারির আনুষ্ঠানিক চিঠিতে ড. ইউনূস উল্লেখ করেছেন যে স্টারলিংকের সংযোগ বাংলাদেশের পরিকাঠামোর সঙ্গে যুক্ত হলে তা উদ্যমী যুব সমাজ, গ্রামাঞ্চল ও সংকটাপন্ন মহিলাদের পাশাপাশি দূরবর্তী ও অবহেলিত সম্প্রদায়ের জন্য রূপান্তরমূলক প্রভাব ফেলবে। নানা বিতর্ক থাকলেও গ্রামীণফোনে বিল্পব ঘটানো ড. ইউনূসের এই উদ্যোগ বাংলাদেশের গ্রাম ও দূরবর্তী অঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগের উন্নতি এবং ডিজিটাল বৈষম্য কমাতে সহায়তা করবে বলেই আশা করছে অনেকে। আসলে স্টারলিংক ইন্টারনেট পরিসেবা দেয় স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে। স্টারলিংকের ইন্টারনেট পেতে গ্রাহককে টেলিভিশনের অ্যানটেনার মতো ডিভাইস বসাতে হবে, যা পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরতে থাকা স্যাটেলাইটের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে। প্রযুক্তি ক্ষেত্রের মানুষজন বলছেন, স্টারলিংক বাংলাদেশে এলে দুর্গম এলাকায় খুব সহজে ইন্টারনেট মিলবে এবং এর ফলে ইন্টারনেট পরিসেবার ক্ষেত্রে গ্রাম ও শহরের পার্থক্য ঘুচে যেতে পারে। দুর্যোগের পর দ্রুত যোগাযোগ করতে বড় ভূমিকা পালন করতে পারবে স্টারলিংক। প্রথম আলোর খবর অনুযায়ী তিন বছর ধরে বাংলাদেশে ব্যবসা করার আগ্রহ দেখাচ্ছে স্টারলিংক। তাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া মানচিত্রে চলতি বছর বাংলাদেশে এর যাত্রা শুরু হওয়ার কথা।