সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ডলারের তুলনায় ভারতীয় টাকার মান উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে, যা অর্থনীতির ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে। টাকার দাম কমায় আমদানিকৃত পণ্যের ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করাও কঠিন হয়ে উঠছে। তবে, এই পরিস্থিতিতে কিছু শিল্প লাভবান হচ্ছে, আবার কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা আরও প্রকট হয়ে উঠছে।
বিশ্ববাজারে টাকার দর কমলে ভারতের রপ্তানি খাত কিছুটা সুবিধা পায়। বিশেষ করে চামড়া, কৃষিজাত পণ্য ও হস্তশিল্পের মতো শিল্পে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়ে। বিদেশি ক্রেতারা কম দামে বেশি পণ্য পেতে আগ্রহী হয়, ফলে ভারতীয় রপ্তানিকারক সংস্থাগুলোর ব্যবসা প্রসারিত হয়। একইসঙ্গে এই শিল্পগুলোর সম্প্রসারণের ফলে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হয়, যা অভ্যন্তরীণ শ্রম বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
অন্যদিকে, টাকার মূল্য বাড়লে অটোমোবাইল, ইলেকট্রনিক্স, ফার্মাসিউটিক্যালস ও পরিশোধিত তেলজাত পণ্য উৎপাদনকারী সংস্থাগুলো উপকৃত হয়। কারণ, এই শিল্পের কাঁচামালের একটি বড় অংশ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। টাকার মূল্য শক্তিশালী হলে আমদানি ব্যয় কমে, ফলে উৎপাদন খরচও হ্রাস পায় এবং রপ্তানি প্রতিযোগিতামূলক হয়ে ওঠে।
তবে কিছু শিল্পের জন্য টাকার দরপতন ক্ষতিকর। বিশেষত টেক্সটাইল খাত, যা দেশীয় কাঁচামালের ওপর নির্ভরশীল। টাকার দাম কমায় আমদানি খরচ বাড়ে, যার ফলে উৎপাদন ব্যয়ও বেড়ে যায়। দীর্ঘমেয়াদে এই পরিস্থিতি অর্থনীতির ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে, কারণ মুদ্রাস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যায়। তাই অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ভারসাম্যপূর্ণ নীতি গ্রহণ করা প্রয়োজন।
Leave a comment
Leave a comment