শুক্রবারেই আমেরিকায় যাচ্ছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।জানা যাচ্ছে আমেরিকার সঙ্গে খনিজ বণ্টন চুক্তি চূড়ান্ত করতে রাজি হয়েছে ইউক্রেন। চুক্তি নিয়ে এই গুঞ্জনের আবহেই আমেরিকা সফরে যাচ্ছেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু তার আগেই বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকে জেলেনস্কিকে নিয়ে সুর নরম করতে দেখা গেল ট্রাম্পকে।
ক্ষমতায় এসেই ইউক্রেন যুদ্ধ থামিয়ে দেওয়ার বার্তা আগেই দিয়েছিলেন ট্রাম্প। যুদ্ধ নিয়ে বাইডেনের উল্টো দিকে ঘুরে তার তাঁর অবস্থান রাশিয়ার দিকেই ঝুঁকে। তাঁর দাবি ছিল জেলেনস্কির এই যুদ্ধ শুরু করাই উচিত হয় নি। তাঁকে ‘স্বৈরাচারী’ও বলেছিলেন। রাষ্ট্রসংঘে ইউক্রেন যুদ্ধের ওপর এক প্রস্তাবে রাশিয়ার নিন্দা জানাতেও অস্বীকার করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্পের এমন অবস্থানে উদ্বিগ্ন ব্রিটেন সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের এমন নরম-গরম সম্পর্কে ইউরোপীয় নেতাদের আশঙ্কা রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে সমঝোতায় ইউক্রেনকেই বাদ দিতে পারেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে স্টারমার জানিয়েছেন যে ব্রিটেন ও ফ্রান্স চাইছে ইউক্রেনের নিরাপত্তার দিকটা বিবেচনা করুক আমেরিকা। শান্তিচুক্তির মাধ্যমে ইউক্রেনে শান্তিরক্ষী মোতায়েন করা হোক।জানান, এটা এমন একটি চুক্তি হতে হবে, যা কেউ লঙ্ঘন করবে না। বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ থামাতে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে ‘বড় অগ্রগতি’ হয়েছে। তবে ইউক্রেনের নিরাপত্তায় কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে রাজি হননি ট্রাম্প।
তবে দিনের শেষে জেলেনস্কির ব্যাপারে সুর নরম করেছেন তাঁর বিরুদ্ধে খড়গহস্ত হয়ে থাকা ট্রাম্প। ট্রাম্প জানান, ‘তাঁর প্রতি আমার অনেক শ্রদ্ধা রয়েছে।’ জেলেনস্কিকে ‘স্বৈরাচারী’ বলেছিলেন বলেও ঠিক মনে করতে পারেন নি তিনি। কিন্তু তাঁর এই সুর নরম নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। ক্রিটিক্যাল মিনারেলস বা গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ নিয়ে একটি চুক্তি সই করার পথে এগোচ্ছে ইউক্রেন ও আমেরিকা। ভবিষ্যতে মার্কিন নিরাপত্তা গ্যারান্টি নিশ্চিত করার জন্য ইউক্রেনের প্রাকৃতিক সম্পদ আমেরিকার সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার প্রস্তাব থেকেই তৈরি হয়েছে এই চুক্তির পথ। গত সপ্তাহে আমেরিকানদের উপস্থাপিত খসড়া চুক্তিতে ইউক্রেনের প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে ৫০ শতাংশ রাজস্বের দাবি করা হলেও বিনিময়ে কোনও নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি। আসলে নিরাপত্তা গ্যারান্টি ছাড়া জেলেনস্কি খসড়া চুক্তি সই করতে অস্বীকার করেছেন। অন্যদিকে আমেরিকাও কিয়েভকে নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিতে নারাজ। যদিও আমেরিকান ও ইউক্রেনীয় কূটনীতিকরা একটি সমঝোতা খুঁজে বের করার জন্য আলোচনা করেছেন।ট্রাম্পের সুর নরম কী সেই দোলাচলের কোনও ফসল ঘরে তোলার ইঙ্গিত? প্রশ্নটা থাকছেই।
Leave a comment
Leave a comment