গাজায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ ছয় সপ্তাহের জন্য সাময়িকভাবে বাড়ানোর অনুমোদন দিল ইসরায়েল। শনিবার গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের মেয়াদ শেষ হলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাবে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হয়। রমজান ও ইহুদিদের পাসওভার উৎসবের সময়কালে এই যুদ্ধবিরতি বলবৎ থাকবে। শনিবার থেকে গাজায় রমজান মাস শুরু হয়েছে, আর ১২ এপ্রিল শুরু হবে পাসওভার, যা চলবে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত।
প্রস্তাব অনুযায়ী, হামাসের হাতে থাকা ইসরায়েলি বন্দীদের অর্ধেককে প্রথম দিনেই মুক্তি দেওয়া হবে। এদের মধ্যে জীবিত ও মৃত উভয়ই রয়েছেন।তবে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হলে বাকি বন্দীরাও মুক্তি পাবেন বলে নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে।তবে ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে হামাস এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
এর আগে, ১৯ জানুয়ারি প্রথম দফায় ৪২ দিনের জন্য গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।সেই সময় হামাস ২৫ জন জীবিত ইসরায়েলি বন্দীকে মুক্তি দেয় ও ৮ জন ইসরায়েলির মৃতদেহ হস্তান্তর করে।এর বিনিময়ে প্রায় দুই হাজার প্যালেস্তেনীয় বন্দিকে মুক্তি দেয় ইসরায়েল।
গাজায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বৃদ্ধি হলেও দ্বিতীয় ধাপে অনাগ্রহী ইসরায়েল।গাজায় প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয়েছে ১ মার্চ। এরপরই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর জানায়, মার্কিন প্রস্তাব অনুযায়ী সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর রাখতে তারা রাজি। চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির ১৬তম দিন থেকেই দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শুরুর কথা ছিল। তবে ইসরায়েল আলোচনায় অংশ নিতে দেরি করে গত বৃহস্পতিবার প্রতিনিধি দল পাঠায় মিসরের কায়রোয়। কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষের আলোচনা ও দরকষাকষি তেমন একটা এগোয়নি। যার ফলে গাজায় আটকে থাকা বাকি বন্দী ও কয়েক লক্ষের বেশি প্যালেস্তেনীয়র ভাগ্য এখনও অনিশ্চয়তায় ঘেরা।
তবে জানা গেছে, ইসরায়েল দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতির বিষয়ে খুব একটা আগ্রহী নয়। বরং তারা প্রথম ধাপের মেয়াদ আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে হামাস এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। তাদের দাবি, যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের মূল চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা দ্রুত শুরু করতে হবে। ১৫ মাসের যুদ্ধে গাজা পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং এর ২৩ লক্ষ জনগোষ্ঠীর প্রায় সবাই নিজের নিজের বাড়ি ছেড়ে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। রাষ্ট্রসংঘের প্রধান আন্তেনিও গুতেরেস জানিয়েছেন, আবারও যুদ্ধ শুরু হলে তা ‘বিপর্যয়কর’ হবে।