প্রেমিকের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ, গ্রেফতার অভিযুক্ত
হরিয়ানায় কংগ্রেস নেত্রী হিমানী নরওয়ালের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের তদন্তে নয়া মোড়। শুক্রবার, রোহতকের সাম্পলা বাসস্ট্যান্ডের কাছাকাছি হাইওয়ের ধারে একটি নীল ট্রলিব্যাগ থেকে তাঁর নিথর দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে রাজনৈতিক মহলে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ নিশ্চিত হয় যে এটি নিছক কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। ঘটনার সূত্র ধরে পুলিশের সন্দেহের তির নির্দিষ্ট কয়েকজনের দিকে ছিল, যার ভিত্তিতে দু’জন যুবককে দিল্লি থেকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে, অন্যজনকে প্রমাণের অভাবে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গেছে, ধৃত যুবকের সঙ্গে হিমানীর ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল। পুলিশের অনুমান, আর্থিক লেনদেনকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল। অভিযোগ, হিমানী একাধিকবার ওই যুবকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছিলেন এবং বিষয়টি নিয়ে চাপ সৃষ্টি করছিলেন। ক্রমাগত মানসিক চাপে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই যুবক প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলেন বলে ধারণা পুলিশের। খুনের রাতে হিমানীকে তাঁর নিজের বাড়িতে হত্যা করা হয় বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। কারণ, যে ট্রলিব্যাগের ভেতর তাঁর মরদেহ পাওয়া যায়, সেটি তাঁর বাড়িরই ছিল।
হিমানীর মায়ের দাবি, খুনি তাঁদের চেনা পরিচিত কেউ হতে পারে। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “যে আমার মেয়েকে হত্যা করেছে, সে আমাদের পরিবারের ঘনিষ্ঠ বা রাজনৈতিক দলে পরিচিত কেউ হতে পারে। হয়তো হিমানী বিপদের আঁচ পেয়েছিল এবং প্রতিরোধ করেছিল, তাই তাঁকে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে। আমি দোষীর মৃত্যুদণ্ড চাই।”
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, হত্যার আগে হিমানীকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছিল। তাঁর শরীরে একাধিক গভীর আঘাতের চিহ্ন ছিল, পাঁজরের হাড় ভাঙা অবস্থায় পাওয়া যায়। এছাড়া, গলায় শক্তভাবে স্কার্ফ পেঁচানো ছিল, যা স্পষ্টতই শ্বাসরোধ করে হত্যার ইঙ্গিত দেয়।
হিমানী হরিয়ানার কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় রাহুল গান্ধীর সঙ্গে অংশ নিয়েছিলেন। কংগ্রেস সূত্রের খবর, তিনি হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র হুডা ও তাঁর ছেলে দীপেন্দ্র হুডার ঘনিষ্ঠ ছিলেন। দলের পক্ষ থেকে এই হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত এবং দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।
Leave a comment
Leave a comment