সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যবহারকারীদের পোস্ট গোপনে মুছে ফেলা এবং হঠাৎ অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করার অভিযোগ ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কোনও রকম পূর্বসতর্কতা ছাড়াই এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে দাবি উঠেছে। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের নজরে আসার পর, কেন্দ্রীয় সরকারকে কারণ ব্যাখ্যা করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।অভিযোগ, সরকারের নির্দেশেই এক্স, ফেসবুকসহ বিভিন্ন জনপ্রিয় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের পোস্ট সরিয়ে দিচ্ছে কিংবা অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিচ্ছে। তবে এতে কোনও আগাম সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছে না। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, কোনও পোস্ট সরানোর আগে বা ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আগে তাঁকে বিষয়টি জানানোর নিয়ম থাকা উচিত। আদালত স্পষ্ট করেছে যে, আগামী শুনানির আগে কেন্দ্রকে তাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে হবে।এই বিষয়ে মামলা দায়ের করেছিল সফটওয়্যার ফ্রিডম ল সেন্টার। বিচারপতি বি আর গভই ও বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহ-এর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে বিষয়টি উত্থাপিত হয়। আদালত বলেছে, যদি কোনও পোস্ট প্রশাসনের আপত্তির মুখে পড়ে এবং সেই পোস্টদাতাকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়, তবে তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা দরকার। প্রয়োজনে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। আদালতের দুই বিচারপতিই এই বিষয়ে একমত হয়েছেন।এই মামলায় সুপ্রিম কোর্টে আবেদনকারীর পক্ষে সওয়াল করেন বিশিষ্ট আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহ। তিনি যুক্তি দেন, বিনা নোটিসে কারও পোস্ট সরিয়ে দেওয়া সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করে। প্রচলিত আইন অনুযায়ী, কোনও পোস্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে কিংবা সংশ্লিষ্ট প্ল্যাটফর্মকে নোটিস দেওয়া বাধ্যতামূলক। তবে সরকার শুধুমাত্র সামাজিক মাধ্যম সংস্থাগুলোকেই নোটিস পাঠিয়ে থাকে, ব্যবহারকারীদের কোনও তথ্য না দিয়েই তাঁদের কনটেন্ট মুছে ফেলা হয় বা অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করা হয়।ইন্দিরা জয়সিংহ আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্টের এক প্রবীণ আইনজীবীর সমাজমাধ্যম অ্যাকাউন্ট কয়েক বছর আগে হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তাঁকে কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি, এমনকি পোস্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ কী ছিল, তাও জানানো হয়নি। আদালত স্পষ্টভাবে বলেছে, ভবিষ্যতে এই ধরনের পদক্ষেপের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীকে চিহ্নিত করা সম্ভব হলে তাঁকে অবশ্যই নোটিস দিতে হবে। আর যদি তা না করা যায়, তাহলে সংশ্লিষ্ট সামাজিক মাধ্যম সংস্থাকে অবগত করতে হবে।সুপ্রিম কোর্টের এই হস্তক্ষেপের পর সরকার কী ব্যাখ্যা দেয়, তা নিয়েই এখন নজর রয়েছে সব মহলের।