দীর্ঘ সময় পর হলেও বাংলাদেশ নিয়ে নিজের মতামত ব্যখ্যা করলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। বাংলাদেশ নিয়ে নিজের মতামত জানিয়েছেন বার্তাসংস্থা পিটিআইকে। হাসিনা পরবর্তী সময়ে এই মুহূর্তে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। তিনি নিজেও অর্থনীতিবিদ এবং একজন নোবেলজয়ী। বাংলাদেশ নিয়ে দীর্ঘ স্মৃতি আছে অমর্ত্য সেনের এবং তিনি মহম্মদ ইউনুসের বিশেষ বন্ধু। সেই অমর্ত্য সেনই এবার বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয় নিয়ে সরকারের পদক্ষেপ করা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করলেন সংবাদ সংস্থার কাছে। এইচটির প্রকাশিত তথ্য অনুসারে তিনি জানান, ‘সংখ্যালঘু ইস্যুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ বরাবরই সংখ্যালঘুদের ন্যায্য অধিকারের ব্যাপারে সচেতন এবং জামায়াতের মতো দলগুলোকে নজরদারিতে রাখা হয়। এ ধরনের হামলা, হোক বাংলাদেশ বা ভারত, বন্ধ হওয়া উচিত।’ অর্থাৎ জামাতের মতো সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলো যাতে বাড়তে না পারে সেদিকে নজর দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
জুলাই বিদ্রোহের পর থেকে বাংলাদেশে কোণঠাসা আওয়ামি লিগ। সামনেই ভোট করানোর দাবিও উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে জামাত, বিএনপি সহ অনেক রাজনৈতিক দলই চাইছে যাতে আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় বাংলাদেশে। এই নিয়ে করা প্রশ্নের উত্তরে অমর্ত্য সেন সরাসরি পিটিআইকে তিনি সোজা জানিয়ে দেন, আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ করা উচিত নয় বলেই তাঁর মত। চিরকাল সু-গণতন্ত্রের প্রতি আস্থাশীল নোবেলজয়ী সেন আওয়ামি লিগ ভোটের ময়দানে থাকুক এমনটাই চান।একটি উদারপন্থী দৃষ্টিভঙ্গি দরকার বলে মনে করেন তিনি।সংবাদসংস্থাকে অমর্ত্য সেন বলেন, ‘আমি মনে করি, কোনও একটি দলকে কোণঠাসা করে দেওয়া উচিত হবে না বাংলাদেশের। সবার একসঙ্গে কাজ করার যে ঐতিহ্য সেই দেশে রয়েছে, সেটাই যেন বজায় থাকে।
যদিও অমর্ত্য সেনের সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ নিয়ে বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। প্রথম আলো প্রকাশিত খবর অনুযায়ী সোমবার নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া ওই পোস্টে জামায়াতের আমির বলেন, ‘ভারতের নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন সম্প্রতি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে অনাকাঙ্ক্ষিত নাক গলানোর মতো কথা বলেছেন। জানি না তাঁর বিবেক কোথায়? বাংলাদেশকে সহনশীলতার সবক দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। তিনি যে দেশে এবং সমাজে বসবাস করেন, সেই সমাজের আয়নায় নিজেকে দেখার চেষ্টা করুন।’ শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের জনগণ টানা সাড়ে ১৫ বছর সেক্যুলারিজমের (ধর্মনিরপেক্ষতা) নামে চরম ভন্ডামি প্রত্যক্ষ করেছে। তিনি পতিত স্বৈরাচারের পক্ষে খোলামেলা ওকালতি করছেন, যা বিস্ময়কর, অগ্রহণযোগ্য ও নিন্দনীয়।