অন্ধ্র প্রদেশের গুন্টাকালের বাসিন্দা টি রমনজনেইলু (৫৫) তাঁর ২০ বছরের মেয়ে টি ভারতীকে নৃশংসভাবে খুন করেছেন। পুলিশ বুধবার তাঁকে গ্রেফতার করেছে। জানা গিয়েছে, গত ১ মার্চ রমনজনেইলু তাঁর মেয়েকে বাড়ি থেকে দূরে অনন্তপুরে নিয়ে যান। সেখানে নির্জন এলাকায় নিয়ে গিয়ে মেয়ের গলায় ফাঁস লাগিয়ে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেন। মেয়ের মৃত্যুর পর তিনি পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়েও দেন।
রমনজনেইলুর তিন মেয়ে ছিল, কিন্তু তিনি তাঁদের পড়াতে পারেননি। তাঁর অনেক স্বপ্ন ছিল ছোট মেয়ে ভারতীকে নিয়ে, কারণ একমাত্র সে-ই স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে পা রেখেছিল। কিন্তু ভারতীর প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি বাবা। বারবার বলেছিলেন, প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে দিতে। কিন্তু ভারতী বাবার কথা শোনেনি।
বিগত ৫ বছর ধরে ভারতীর সঙ্গে এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দুই পরিবারে জানাজানি হতেই, দুই পক্ষই আপত্তি জানায়। কিন্তু ওই যুগল কারোর কথা শুনতে নারাজ ছিল। তারা সম্পর্ক ভাঙেনি। এমনকী প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে অশান্তির জেরে মায়ের সঙ্গে কথা বলাও বন্ধ করে দিয়েছিল ভারতী। সম্পর্ক ভাঙতে বললে আত্মহত্যার হুমকি দিত। মেয়ের এই জেদ, অবাধ্যতায় বিরক্ত হয়েই ১ মার্চ মেয়েকে নৃশংসভাবে খুন করেন বাবা।
পুলিশের জেরায় রমনজনেইলু জানিয়েছেন, তিনি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি। তাঁর মতে, মেয়ের এই সম্পর্ক তাঁদের পরিবারের সম্মানহানি ঘটাচ্ছিল। তাই তিনি মেয়েকে খুন করার সিদ্ধান্ত নেন।
এই ঘটনার পর স্থানীয় মানুষজনের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অনেকেই এই নৃশংস ঘটনার নিন্দা করেছেন। তাঁরা বলছেন, প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিতে না পারলেও এমন নৃশংসভাবে মেয়েকে খুন করা কখনওই গ্রহণযোগ্য নয়। পুলিশ জানিয়েছে, রমনজনেইলুর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই ঘটনা আমাদের সমাজের এক অন্ধকার দিক তুলে ধরেছে। প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে পরিবারের মধ্যে অশান্তি, এবং সেই অশান্তির জেরে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটানো কখনওই মেনে নেওয়া যায় না। সমাজের প্রতিটি স্তরে এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।