সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়
‘ভূতুড়ে ভোটার’ নিয়ে অভিযোগ জানাতে এ বার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের দ্বারস্থ হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। আগামী মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৫টায় কমিশনের ‘ফুল বেঞ্চের’ সঙ্গে দেখা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের প্রতিনিধিরা।তৃণমূলের ওই প্রতিনিধিদলে থাকবেন মোট ১০ জন। রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, সাগরিকা ঘোষ, কীর্তি আজ়াদ, সাজদা আহমেদ, অসিতকুমার মাল, আবু তাহের খান, প্রকাশ চিক বরাইক এবং সাকেত গোখলে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন।বস্তুত, ভুয়ো ভোটার বা ভূতুড়ে ভোটার নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে রাজ্য রাজনীতি সরগরম। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের সভা থেকে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা ভুয়ো ভোটার ধরতে কমিটি গঠন করেন। তার পর থেকে ‘ভূতুড়ে ভোটার’ ধরতে এলাকায় এলাকায় যাচ্ছেন তৃণমূল নেতারা। তৃণমূলের তোলা একই এপিক নম্বরে একাধিক নাম সংক্রান্ত অভিযোগ স্বীকার করেছে নির্বাচন কমিশনও। তারা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, ত্রুটিপূর্ণ ভোটার কার্ডের ব্যাপারে তিন মাসের মধ্যে ইউনিক এপিক কার্ড নম্বর চালুর পদক্ষেপ করা হবে। আগামী দিনে দেশ জুড়ে নতুন ভোটারদের জন্য জাতীয় ইউনিক নম্বর চালু হবে। উল্লেখ্য, আগেই তৃণমূল ইউনিক এপিক কার্ড নম্বর চালুর দাবি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল।
অন্য দিকে, ‘ভূতুড়ে ভোটার’ নিয়ে অভিযোগ জানাতে গত বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করেন সুব্রত বক্সী, ফিরহাদ হাকিম, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, অরূপ বিশ্বাসেরা। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে রাজ্যের শাসকদল কোর কমিটির বৈঠকও করেছে। ফিরহাদ জানান, তাঁরা অভিযোগ করেছেন, ভিন্রাজ্যের ভোটারদের বাংলায় ‘ডবল এন্ট্রি’ করে ভোটার করা হচ্ছে। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিতেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। অন্য দিকে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোটার তালিকা প্রভাবিত করার অভিযোগ তুলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরাও। এই বিতর্কের মাঝে মঙ্গলবার মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার সহ ফুল বেঞ্চের সাক্ষাৎপ্রার্থী তৃণমূল প্রতিনিধিদল। ডেরেক জানিয়েছেন, তাঁরা কমিশনের কাছে সময় চেয়েছিলেন। মঙ্গলবার সাড়ে ৫টায় কমিশন সময় দিয়েছে। বস্তুত, এপিক সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে লোকসভা অধিবেশনও সরগরম হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তার মাঝেই তৃণমূল প্রথম রাজনৈতিক দল, যারা বিষয়টি নিয়ে আগেই কমিশনের দ্বারস্থ হচ্ছে।