আইপিএলের প্রবর্তক ললিত মোদীকে বড়সড় ধাক্কা দিল ভানাটু সরকার, দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের এই দ্বীপরাষ্ট্র তাঁর পাসপোর্ট বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভানাটুর প্রধানমন্ত্রী জোথাম নাপাট সরাসরি এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছেন। কিছুদিন আগে ললিত মোদী সে দেশের নাগরিকত্ব লাভ করেন। এরপর তিনি লন্ডনের ভারতীয় দূতাবাসে গিয়ে ভারতীয় পাসপোর্ট ফেরত দেওয়ার জন্য আবেদন জানান। কিন্তু এর আগেই ভানাটু প্রশাসন তাঁর নাগরিকত্ব বাতিল করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে।
ভানাটু সরকারের স্পষ্ট বক্তব্য, কেউ যদি ফৌজদারি মামলার দায় এড়িয়ে কিংবা প্রত্যর্পণের ভয় থেকে বাঁচতে তাঁদের দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে চান, তবে তা কোনোভাবেই বৈধ কারণ হিসেবে বিবেচিত হবে না। ললিত মোদীর নাম দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। আইপিএলের শীর্ষ পদে থাকার সময় তাঁর বিরুদ্ধে বিপুল অর্থের অসংগত ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে। ২০১০ সালে তিনি দেশ ছাড়েন এবং সেই থেকে লন্ডনেই বসবাস করছেন। যদিও ভারতের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা তাঁর বিরুদ্ধে মামলা চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু এতদিনেও তাঁকে দেশে ফেরানো সম্ভব হয়নি।
তবে ললিত মোদী একা নন, পশ্চিমবঙ্গের কয়লা পাচার মামলায় অভিযুক্ত ও পলাতক যুব তৃণমূল নেতা বিনয় মিশ্রও ভানাটুর নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। সূত্রের খবর, ভানাটুর এই সিদ্ধান্তের পেছনে নিউ জিল্যান্ড-সহ প্রশান্ত মহাসাগরের একাধিক দেশের ভূমিকা রয়েছে। বিশেষত, এই পদক্ষেপ নিতে ভারতীয় কূটনৈতিক মহল, বিশেষ করে নিউ জিল্যান্ডে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত নীতা ভূষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন বলে জানা যাচ্ছে।
লন্ডনে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসে গিয়ে গত ৭ মার্চ নিজের ভারতীয় পাসপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য আবেদন করেন ললিত মোদী। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন যে ললিত মোদী ভারতীয় পাসপোর্ট জমা দেওয়ার আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে, পাশাপাশি তাঁর ভানাটুর নাগরিকত্ব সংক্রান্ত বিষয়টিও গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে। আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ললিত মোদীর বিরুদ্ধে তদন্ত চললেও তাঁকে ভারতে ফিরিয়ে আনার কোনো কার্যকর উদ্যোগ সফল হয়নি। বিরোধীদের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে তদন্তের গতিকে শ্লথ করেছে এবং তাঁর প্রত্যর্পণের বিষয়ে দৃঢ় কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এখন ভানাটুর নাগরিকত্ব বাতিলের পর, তিনি পরবর্তী সময়ে কোথায় আশ্রয় নেবেন বা আইনি প্রক্রিয়ায় নতুন কোনো পরিবর্তন আসবে কি না, সে নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে।
Leave a comment
Leave a comment