বেড়ে চলা নারী নির্যাতন নিয়ে গোটা বাংলাদেশ যখন উত্তাল ঠিক তখনই তা নিয়ে সরব হলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।৯ মার্চ মধ্যরাতে হাসিনার দল আওয়ামী লীগ সমাজমাধ্যমে একটি অডিয়ো বার্তা প্রকাশ করে। তাতে এবার সরাসরি ‘ মুহাম্মদ ইউনূসের হাত থেকে দেশকে রক্ষা’ করার বার্তা দিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।
বেশ কয়েকদিন ধরেই বাংলাদেশ উত্তাল মাগুরার নাবালিকা ধর্ষণ কাণ্ডকে ঘিরে। ক্রমেই লাগামছাড়া অবস্থায় চলে যাচ্ছে বাংলাদেশের আইন শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি। হিংসার শিকার হচ্ছেন সেদেশের নারীরা। এর প্রতিবাদে ঢাকা সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মধ্যরাতে বিক্ষোভ দেখান। অডিও বার্তায় শেখ হাসিনা বর্তমান বাংলাদেশে মেয়েদের সম্মান নেই বলে তোপ দাগেন।বক্তব্যের শুরুতেই হাসিনা বলেন, “মেয়েরা অনেকেই স্লোগান দিয়েছে আমাকে বিদায় দেওয়ার জন্য। আমায় বিদায় দেওয়ার পর বাংলাদেশের কী অবস্থা দেখুন। আজ মেয়েদের সম্মান নেই।” বর্তমান আমলে মেয়েরা কী পোশাক পরবে না পরবে, কিংবা বাড়ি থেকে বেরোবে কি না, তা স্থির করে দেওয়া হয় বলে দাবি করেন হাসিনা। আওয়ামী লীগ আমলের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, “আমরা নারী নির্যাতন বন্ধে কঠোর আইন এনেছিলাম। অপরাধীদের নাম যাতে প্রকাশ্যে আসে, তা সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি কঠোর সাজার বন্দোবস্ত রেখেছিলাম।”
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস প্রসঙ্গে হাসিনা বলেন যে ক্ষমতায় এসেছেন একজন সুদখোর, জঙ্গিনেতা ইউনূস। ওই ওডিও বার্তায় শেখ হাসিনা আরও বলেন, “ইউনূস নারী ক্ষমতায়ণ এবং দারিদ্র বিমোচনের কথা বলছেন। কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে কোথায়?” দাবি করেন যে, গত জুলাই-অগস্টে আন্দোলন চলার সময়েও তাঁর সরকার সহনশীল থেকে আন্দোলনকারীদের কথা শুনেছিল। কিন্তু ইউনূসের আমলে কেউ আন্দোলন করতে পারে না।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের এক দিন পর রবিবার প্রায় ৯ মিনিটের একটি অডিও বার্তায় ওপার বাংলায় নারী নির্যাতন নিয়ে উদ্বেগের পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসকে আক্রমণ করেন শেখ হাসিনা। হাসিনার অভিযোগ নারী সুরক্ষায় তো বটেই অন্যান্য মানদণ্ডেও ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে সোনার বাংলাদেশ।
তবে এবারই প্রথম নয়,এর আগেও অডিও বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।গত জানুযারি মাসে শেখ হাসিনা দাবি করেন, গত বছরের ৫ আগস্ট যখন ছাত্র আন্দোলনের চাপে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন, ঠিক সেই মুহূর্তে তাঁকে এবং তাঁর বোন রেহানাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। হাসিনা বলেন, “রেহানা আর আমি, মাত্র ২০-২৫ মিনিটের ব্যবধানে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। এটি প্রথমবার নয়, এর আগেও আমাকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে।” সেবারের মত এবারও শেখ হাসিনা দাবি করেছেন, তাঁর জীবনে ঘটে যাওয়া একের পর এক ঘটনায় মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যাওয়া যেন এক আশ্চর্য ঘটনা। তিনি মনে করেন যে জীবনকে কাজে লাগিয়ে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার দায়িত্ব দিয়েছেন সৃষ্টিকর্তা।