সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়
এবার থেকে বিরোধী বিজেপি বিধায়কদের বিধানসভার কার্যবিবরণী বৈঠকের নথি দৈনিক অধিবেশনের বুলেটিন এমনকি স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্ট অধিবেশন কক্ষে দেওয়া হবে না। বারবার বিধানসভার মর্যাদা ক্ষুন্ন করছেন বিরোধী পক্ষের বিধায়করা এই অভিযোগ তুলে এ ধরনের কড়া পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর মতে,
“বিধানসভার শৃঙ্খলা ও মর্যাদা রক্ষার দায়িত্ব আমার একার নয়। বিধানসভার সমস্ত সদস্যকেই বিধানসভার মর্যাদা ও নিয়ম-কানুন রক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে। যদি কেউ সেই মর্যাদা রক্ষা করতে না পারেন তাহলে তাদের বিধানসভার প্রাপ্য অধিকার দেওয়া হবে না।”
গতকালের পর ফের আজ রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন চলাকালীন একটি মুলতবি প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে বিরোধীপক্ষের বিজেপি বিধায়কেরা বিধানসভায় স্লোগান-হইচই শুরু করেন। প্রতিদিন অধিবেশন কক্ষে সমস্ত সদস্যদের বিধানসভার কার্যবিবরণী বৈঠকের সিদ্ধান্তের কপি দেওয়া হয়। একইসঙ্গে বিধানসভার বিভিন্ন প্রশ্নোত্তর সহ দৈনিক বুলেটিন এবং বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্ট প্রতিটি সদস্য টেবিলে বা তার বসার জায়গায় কর্মীরা অধিবেশনের শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই দিয়ে দেন। গতকালের মত এদিনও অধিবেশন চলাকালীন বিজেপি বিধায়করা বিধানসভার এই সরকারি নথি ছিঁড়ে এবং বিধানসভার ওয়েলে নেমে ছেঁড়া নথিগুলো অধ্যক্ষের দিকে ছুঁড়ে দিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, বিধায়কদের বিলি করা এই সরকারি নথিগুলি সরকারি সম্পত্তি। অধ্যক্ষের সিদ্ধান্ত, যারা বারবার আবেদন করা সত্ত্বেও বিধানসভার মর্যাদা ক্ষুন্ন করে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করছেন তাদের এখন থেকে বিধানসভার কার্য বিবরণী বৈঠকের রিপোর্ট দৈনিক বুলেটিন এবং স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্ট অধিবেশন কক্ষে দেওয়া হবে না। তাদের তথ্য জানার অধিকারী তাদের নির্দিষ্ট অফিসে বা দপ্তরে এই সরকারি নথিগুলো নিয়মমাফিক পৌঁছে দেয়া হবে। সেখানেই সংশ্লিষ্ট সদস্যরা অধিবেশনের কার্যবিবরণী দৈনিক বুলেটিন দেখে নিতে পারবেন। বিজেপি বিধায়কদের উপরে খুব উগরে দিয়ে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য ” গতকাল এবং আজ অধিবেশন কক্ষে বিজেপি বিধায়করা যে আচরণ করেছেন আমার স্মরণকালের মধ্যে বিধানসভার মর্যাদা লঙ্ঘন করে এ ধরনের অসভ্য আচরণ করতে দেখিনি।”
উল্লেখযোগ্য, গতকালও বিজেপির পক্ষ থেকে তোলা দাবি-দাওয়া অধ্যক্ষ মানতে নারাজ হলে দুই বিজেপি বিধায়ক অধিবেশন কক্ষে সরকারি নথি ছিড়ে স্লোগান দিয়ে চেঁচামেচি শুরু করেন। অধ্যক্ষের বারবার আবেদনে ও তারা কর্ণপাত করেননি। পরিস্থিতি সামাল দিতে শেষ পর্যন্ত মার্শালকে ডেকে বিজেপির ওই দুই বিভাগকে অধিবেশন কক্ষ থেকে বের করে দেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর ফের আজ অধিবেশন কক্ষে বিজেপি বিধায়কেরা একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটালে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।