পরিতোষ সাহা: বীরভূম: দেউচা- পাঁচামীর কয়লা প্রকল্পকে নিয়ে আদিবাসীদের সন্দিহান দূর করতে এবার স্থানীয় শিক্ষিত আদিবাসী যুবকদের নামালো শাসকদল তৃণমূল। প্রশাসনের পাশাপাশি, আদিবাসী যুবকদের এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ১৫০ জন শিক্ষিত আদিবাসী যুবকদের বাছাই করা হয়েছে।তাদের মূল কাজ কয়লা প্রকল্প নিয়ে স্থানীয় অনিচ্ছুক আদিবাসীদের বোঝানো বাড়ী বাড়ী ঘুরে।
গতকাল (সোমবার) থেকে এই কাজে নামানো হয়েছে কয়লা প্রকল্পের অধীনে থাকা প্রায় দশটি গ্রামের বাসিন্দাদের। যারা মূলত আদিবাসী সম্প্রদায় ভুক্ত।প্রথম দফায় ১৫০ জন আদিবাসী শিক্ষিত যুবকদের বাছাই করা হয়েছে। আরো ১০০ জন যুবকের নামের তালিকা তৈরি করেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। যাদের কাজ প্রতিটি গ্রামে নিয়ে মূলত আদিবাসী মানুষদের কয়লা প্রকল্প নিয়ে পরিষ্কার চিত্র তুলে ধরা।মহম্মদবাজার ব্লকের হিংলো ও ভাঁড়কাটা গ্রামপঞ্চায়েতের অধীনে মথুরাপাহাড়ি, চাঁদা, সাগরবান্দি,নতুনপাড়া,রামপাড়া,বারোমেসিয়া,গাবারবাথান,হাটগাছা,গিরিজোড়,হাবড়াপাহাড়ি সহ বিভিন্ন গ্রামে চলতি সপ্তাহের সোমবার থেকে প্রতিটি গ্রামে যাচ্ছেন এই যুবকেরা। তারাও এই সমস্ত গ্রামের বাসিন্দা।তারাই কয়লা প্রকল্প নিয়ে আদিবাসী মানুষদের বোঝানোর কাজ শুরু করেছেন।যে, যে গ্রামের বাসিন্দা, সেই গ্রামের শিক্ষিত যুবকেরা, তাদের সাঁওতালি ভাষায়, নিজের গ্রামের আদিবাসী মানুষদের বোঝানোর কাজ শুরু করেছেন।প্রতিদিন নিয়মিতভাবে এই কাজ করছেন স্থানীয় যুবকেরা।বিকাল থেকে এই কাজ করছেন।স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব সূত্রে জানা গেছে,আস্তে আস্তে আরো শিক্ষিত যুবক নেওয়া হবে।আপাততঃ ভাবে ২৫০ জনের নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। দিন যত এগোবে এই কাজের পরিমান আরো বাড়বে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে।
কিন্তু কী কারণে এই পরিকল্পনা তৃণমূলের? তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে,মূলত দুটি কারণ।প্রথমতঃ পুলিশ,প্রশাসন তাদের বোঝাতে সক্ষম হলেও,স্থানীয় আদিবাসী সমাজের মানুষজন তাদের সাথে কিছুটা দূরত্ব থেকেই যায়। ফলে বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দ্বিতীয়তঃ ভাষাগত একটি সমস্যা।যেটি সবথেকে বড় সমস্যা। সেক্ষেত্রে নিজেদের গ্রামের শিক্ষিত যুবকরা, তাদের চলতি ভাষায় কথা বলে তাদের মন বুঝবার চেষ্টা করবে।তাদের কোন অভাব- অভিযোগ থাকলে তারা প্রকাশ করতে পারবে।এবং শিক্ষিত যুবকেরা স্থানীয় আদিবাসী মানুষদের বোঝাতে পারবে। সর্বোপরি,তারা তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরে পাবে।মহম্মদবাজার ব্লক তৃণমূল সভাপতি কালী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন ‘কয়লা প্রকল্প নিয়ে আদিবাসী মানুষদের মধ্যে যে কিছুটা সংশয় আছে,তা সম্পূর্ণ ভাবে মিটিয়ে ফেলতে এই পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।প্রতিটি গ্রাম থেকেই শিক্ষিত যুবকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।এবং সেটি দলমত নির্বিশেষে।এখনও পর্যন্ত ২৫০ জন যুবকদের এই কাজে নামানো হয়েছে।পরবর্তী ক্ষেত্রে এর পরিমান আরো বাড়বে’।
তবে, দেউচা- পাঁচামী কয়লা প্রকল্প নিয়ে আদিবাসী সমাজের মানুষজনদের মন জয় করতে।বলা ভালো আদিবাসীদের মনের সংশয় কাটাতে প্রশাসনের উপর কিছুটা ভরসা কমিয়ে, শাসক তৃণমূল নিজেরাই এবার আসরে নেমে পড়লো কোমর বেঁধে।
Leave a comment
Leave a comment