এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের আগে চরম সংকটে ইস্টবেঙ্গল। তুর্কমেনিস্তানের আর্কাদাগ শহরে প্রতিপক্ষের লড়াইয়ের চেয়েও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে অনুশীলনের অনুপযুক্ত পরিবেশ। ম্যাচের আগে সঠিক প্রস্তুতি নেওয়া নিয়েই দেখা দিয়েছে বড় সমস্যা।
ম্যাচের ঠিক দুই দিন আগে প্রস্তুতি নিতে গিয়েই বিপাকে পড়লেন ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলাররা। অনুশীলনের জন্য যে মাঠ দেওয়া হয়েছে, তার অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে স্বাভাবিক অনুশীলনই সম্ভব হয়নি রাফায়েল মেসি ও দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোসদের জন্য।
প্রথম লেগে যুবভারতীতে ০-১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়ে ব্যাকফুটে ইস্টবেঙ্গল। সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করতে হলে ফিরতি লেগে কমপক্ষে দু’গোলের জয় প্রয়োজন তাদের। তবে এক গোলের ব্যবধানে জয় পেলেও লড়াই গড়াবে টাইব্রেকারে, যেখানে ভাগ্যের সহায়তা না পেলে পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠতে পারে লাল-হলুদের জন্য।
গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে একের পর এক চ্যালেঞ্জের মুখে ইস্টবেঙ্গল। দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তি কাটতে না কাটতেই নতুন সমস্যায় পড়তে হলো দলকে। রবিবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় আর্কাদাগ শহরে পৌঁছানোর পরই ফুটবলারদের জানিয়ে দেওয়া হয়, হোটেলের বাইরে যাওয়ার অনুমতি নেই। শুধু তাই নয়, পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগও মিলল না, কারণ একাধিকবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও মোবাইলে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়নি।
সোমবার ইস্টবেঙ্গলের অনুশীলনের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল আলতিন আসির স্টেডিয়াম, কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর পরই ফুটবলারদের মুখে স্পষ্ট হতাশার ছাপ পড়ে। মাঠের দুরবস্থা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, খেলার উপযোগী পরিবেশ তো দূরের কথা, স্বাভাবিক অনুশীলন করাটাই কঠিন হয়ে পড়ে। বিভিন্ন জায়গায় ঘাস উঠে গিয়ে মাটির স্তর উন্মুক্ত হয়ে গেছে, কোথাও আবার ফাটল ধরে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মাঠের অসমান পৃষ্ঠে চলাফেরাই দুষ্কর, সেখানে অনুশীলনের ঝুঁকি নিতেই চাননি কোচ অস্কার ব্রুজোন। খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার কথা ভেবে বাধ্য হয়েই অনুশীলনের সময় কমিয়ে আনতে হয় তাঁকে।
দলের এক কর্মকর্তা জানান, “এমন মাঠে খেলা তো দূরের কথা, স্বাভাবিক অনুশীলন করাও বিপজ্জনক। ফুটবলারদের চোটের ঝুঁকি মাথায় রেখে আমরা বাড়তি সতর্কতা নিয়েছি।”
আগামী গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ঘিরে আগে থেকেই চিন্তায় রয়েছে ইস্টবেঙ্গলের কোচিং দল। দলের অন্যতম প্রধান রক্ষণভাগের ভরসা আনোয়ার আলি চোটের কারণে বাইরে থাকায় ডিফেন্স নিয়েই দুশ্চিন্তা তুঙ্গে। তার উপর, প্রস্তুতির সময় নতুন কোনো খেলোয়াড় চোট পেলে দলের কৌশল বদলানো ছাড়া উপায় থাকবে না, যা এই মুহূর্তে মোটেও আদর্শ পরিস্থিতি নয়। প্রতিকূল পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়েই ফুটবলারদের মাঠে নামতে হবে, যা এই ম্যাচের আগে ইস্টবেঙ্গলের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
Leave a comment
Leave a comment