পরিতোষ সাহাঃ বীরভূম
কেমিক্যাল মেশানো আবির থেকে বিরত থাকতে স্কুল বাগান থেকে প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সংগ্রহ করে স্কুলের ল্যাবরেটরিতেই তৈরী হচ্ছে ভেষজ আবির। ছাত্র ছাত্রীরা নিজেরাই এই আবির তৈরি করছেন।পাশাপাশি স্কুল পড়ুয়ারা নিজেরাই এই কাজ করে স্বনির্ভর হতে চাইছে। স্কুলের শিক্ষকরা এই পাঠ দিতেই স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের এই ভেষজ আবির তৈরী করছে।এবছর এই অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে সিউড়ির ১ নং ব্লকের অন্তর্গত করিধ্যা যদুরায় মেমোরিয়াল এন্ড পাবলিক ইনস্টিটিউশন।
২০১৯ সাল থেকে স্কুলের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক ডঃ কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায় এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তৈরি করেছিলেন ভেষজ উদ্যান। সেই উদ্যানে নানারকম ভেষজ উদ্ভিদ লাগান। সেই বাগান থেকেই কালো হলুদ,লিপস্টিক ফল ও অ্যালোভেরা মিশিয়ে এই ভেষজ আবির তৈরি করছে স্কুলের পড়ুয়ারা।
কিন্তু কিসের জন্য এই ভাবনা?
শিক্ষকদের দাবী, প্রতিবছর দোলের পর ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে আসলে দেখা যেত ক্যামিক্যাল যুক্ত আবির ব্যবহারের ফলে ছাত্র ছাত্রীদের গায়ে রঙের ছোপ লেগে থাকতো, পাশাপাশি ৱ্যাস দেখা দিত। তখন এই ভেষজ আবির তৈরীর কথা মাথায় আসে স্কুল শিক্ষকদের। তাই এবছর দোলের প্রায় এক মাস আগে থেকে শুরু হয়ে যায় আবির তৈরীর প্রস্তুতি ।
স্কুলের শিক্ষক মহেন্দ্র পাল জানান, ” স্কুলের বাগানে থাকা লিপস্টিক গাছ (বিজ্ঞান সম্মত নাম বিক্সা )তার বীজ সংগ্রহ করার পর সেটা গুঁড়ো করে রোদে শুকিয়ে নেওয়া হয় । লাল রঙের সেই গুঁড়োর সাথে সোপ স্টোন মিশিয়ে আবারো শুকিয়ে নেওয়ার পর যুক্ত করা হয় ক্ষ্যারিও পদার্থ। এর পর এর সাথে সুগন্ধি মেশানোর পর হয় লাল আবির। এছাড়াও হলুদ ব্যবহার করে হচ্ছে হলুদ ও নিমপাতা ব্যবহার করে তৈরী হচ্ছে সবুজ আবির। পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে আলোভেরাও। আর এই পুরো কাজটিই স্কুল ল্যাবরেটরিতে শিক্ষকদের নজরদারিতে করছে ছাত্রছাত্রীরা।
আগে বহুবার ভেষজ আবির ব্যবহার করলেও, এই প্রথম নিজেরা আবির তৈরী করতে পেরে খুশি দশম শ্রেণীর ছাত্রীরা।দশম শ্রেণির ছাত্রী সৌমি চক্রবর্তী, পরমী অধিকারী বলেন ‘ আমরা স্কুলের বাগান থেকে বিভিন্ন ভেষজ নিয়ে এই আবির তৈরি করছি।এই আবির মাখলে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় না।তাই এই ভাবনা’।