কলকাতা মেট্রোর ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ইয়েলো লাইন অর্থাৎ নোয়াপাড়া বারাসত ভায়া বিমানবন্দর রুটের ফেজ় ওয়ানের কাজ প্রায় শেষ। ফেজ় ওয়ানে রয়েছে নোয়াপাড়া থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সাত কিলোমিটার দীর্ঘ পথ। এই অংশই আপাতত কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির (সিআরএস) পরিদর্শন ও অনুমোদনের অপেক্ষায়। কলকাতা মেট্রো সূত্রে খবর, এপ্রিলেরই কোনও এক সময়ে সিআরএস এর প্রতিনিধিরা পরিদর্শনে আসবেন। সেই অনুমোদন পাওয়া গেলে ইয়েলো লাইনের ফেজ় ওয়ানে শুরু করা যাবে মেট্রো চলাচল। মেট্রো অধিকারিকদের ধারণা জুন জুলাইয়েই শুরু হতে পারে এই নয়া রেল পথ। প্রাথমিক ভাবে পরিকল্পনা ছিল নোয়াপাড়া থেকে দমদম ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত ৩ কিলোমিটারের মধ্যে প্রথমে মেট্রো পরিষেবা চালু করা হবে। সেই মতো ওই অংশের অনুমোদনও নেওয়া হয় সিআরএস এর থেকে,কিন্তু পরে বদলানো হয় পরিকল্পনা। লাইন যাতে শুরু থেকেই বাণিজ্যিক ভাবে সফল হয়, তার জন্য ফেজ় ওয়ানের আওতায় আনা হয় দমদম ক্যান্টনমেন্ট থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত অতিরিক্ত চার কিলোমিটার অংশকেও। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চালিয়ে সেই অংশটি সম্পূর্ণ করা হয়েছে বলে মেট্রো সূত্রে খবর । এ বার অপেক্ষা সিআরএস কর্তাদের ছাড়পত্রের । কলকাতা মেট্রোর আধিকারিকরা মনে করছেন, নোয়াপাড়া, দমদম ক্যান্টনমেন্ট, যশোহর রোড এবং বিমানবন্দর এই চারটি স্টেশনের মধ্যে মেট্রো চললে শুধুমাত্র বিমানবন্দরের উপস্থিতির জন্যই ফেজ় ওয়ান অংশটি দিনে প্রায় ৮০ হাজারের কাছাকাছি যাত্রী পরিবহণ করবে যাতে লাভ হবে মেট্রোরই। কিন্তু নোয়াপাড়া ও দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের মধ্যে ট্রেন চালালে যাত্রীর সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই কম হতো বলে আশংকা ছিল । এবার আর বিবাদী বাগেই থেমে যাবে না পার্পল লাইনের মেট্রো, শেষ স্টেশন হবে ইডেন গার্ডেন্স। ইয়েলো লাইনের ফেজ় ওয়ানের আকর্ষক বিষয়গুলির মধ্যে অন্যতম হলো, ২০ হাজার বর্গমিটার এলাকা জুড়ে তৈরি বিমানবন্দর স্টেশন। ওই স্টেশনে প্ল্যাটফর্মের সংখ্যা পাঁচ। এর মধ্যে ১ ও ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মটি ইয়েলো লাইনের জন্য নির্দিষ্ট। বাকি তিনটি প্ল্যাটফর্ম অরেঞ্জ লাইনের অর্থাৎ বিমানবন্দর থেকে নিউ গড়িয়া যাতায়াতের। এই বিমানবন্দর মেট্রো স্টেশন থেকে মাত্র ৩০০ মিটার দূরে থাকছে একটি ভূগর্ভস্থ স্টেবলিং ইয়ার্ড। প্রায় ১৭ হাজার বর্গমিটার জায়গা নিয়ে তৈরি ওই ইয়ার্ডে মেট্রোর রেক রাখা যাবে। ওই ইয়ার্ড মাটির ১৩ মিটার গভীরে তৈরি করা হয়েছে। ইয়েলো লাইনের ফেজ় ওয়ান বাণিজ্যিক ভাবে যাত্রী পরিবহণ শুরু করে দিলে বিমানবন্দর থেকে এসপ্ল্যানেড পৌঁছতে সময় লাগবে মাত্র আধ ঘণ্টা যায় আমূল বদলে যাবে শহরের গণ পরিবহণের মানচিত্রটাই।