ফের বাংলাদেশে ফেরার কথা শোনালেন সেদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লীগের নেত্রী শেখ হাসিনা।সোমবার রাতে এক ভার্চুয়াল আলোচনায় দলীয় কর্মীদের সমর্থকদের আশ্বস্ত করে বললেন, ”চিন্তা করবেন না। আমি আসতেছি।” তাঁর অভিযোগ ইউনূসের বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নেতানেত্রীদের নানা মামলায় জড়িয়ে তাঁদের জেলবন্দি করা হয়েছে। হাসিনার হুঙ্কার, ”সব অভিযোগের বিচার হবে।” দলের ভারচুয়াল সম্মেলন থেকে ফের প্রত্যাবর্তনের হুঙ্কার দিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে অন্তবর্তী সরকার। তার পর থেকে ওপার বাংলায় আওয়ামি লিগের নেতা-কর্মীদের ওপর মারাত্মক অত্যাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এমনকি বাংলাদেশে আওয়ামি লিগ নেতানেত্রীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে তাঁদের জেলবন্দিও করা হচ্ছে। ওই আলোচনাপর্বে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সমস্যার কথা শোনেন আওয়ামী লীগের নেত্রী। কর্মী-সমর্থকেরা দাবি করেন, তাঁদের পরিবারের উপর বিভিন্ন ধরনের অত্যাচার চলেছে।
ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশছাড়া হলেও শেখ হাসিনার নেত্রীসুলভ লড়াকু মনোভাব একটুও কমেনি বলে আলোচনা চলছে বিভিন্ন মহলে।দলকে ভগ্নদশা অবস্থা থেকে দলকে ফের টেনে তুলতে বারবার ভোকাল টনিক দিয়ে চলেছেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী। সোমবার দলের ভার্চুয়াল সম্মেলন থেকে ফের প্রত্যাবর্তনের কথা বলে হাসিনা সব অভিযোগের বিচার হবে বলে জানিয়েছেন। মুজিব-কন্যার কথায়, “যাঁরা এই জঘন্য কাজ করেছেন, তাঁদের বিচার বাংলাদেশে হতেই হবে। সেটি আমরা করবই।”
ভার্চুয়াল সম্মেলনে ইউনূসকে ‘সুদখোর’, বলেও কটাক্ষ করেন হাসিনা।তাঁকে ‘মানবতা বিরোধী’, ‘গদ্দার’ বলেছেন মুজিবকন্যা। আওয়ামী লীগের নেত্রীর দাবি, “আমরা আমাদের প্রতিপক্ষের সঙ্গে এমন ব্যবহার করিনি। কিন্তু ইউনূস (করছে) ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার জন্য।” বাংলাদেশের পরিস্থিতির কথা ‘অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল’-এর মতো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান-সহ অন্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দেওয়ার বার্তাও দেন তিনি।
তবে শেখ হাসিনার মুখ বন্ধ করতে ও তাঁর জামানা শেষ করতে বারবার চেষ্টা করেছে ইউনূস সরকার, অভিযোগ এমনটাই। নয়াদিল্লিকেও বার্তা দেওয়া হয়।বিমসটেক বৈঠকের ফাঁকে মোদী-ইউনূস বৈঠকে হাসিনা প্রসঙ্গ উত্থাপন করা হয়েছিল বলে দাবি করেছিল বাংলাদেশ সরকার। এদিকে আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে সরব হয়েছে এনসিপি, জামাত। যদিও মাঝে সেনা প্রধান ওয়াকার-উজ-জামান নাকি ‘রিফাইন্ড আওয়ামি লিগ’-এর বার্তা নিয়েও উত্তাল হয় বাংলাদেশ।
সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের অর্থ বাজেয়াপ্ত করে বর্তমানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। মুহাম্মদ ইউনূস ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শেখ হাসিনা, তাঁর পরিবার এবং প্রাক্তন আওয়ামি লিগ নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। এই আবহে বাংলাদেশ সকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়। অপরদিকে গুম-খুনের মামলায় মুজিবকন্যার বিরুদ্ধে জারি করা হয় গ্রেফতারি পরোয়ানা। রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রসিকিউশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে শেখ হাসিনাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
অভিযোগ আওয়ামি লিগ নেতানেত্রী, দলের সমর্থকদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়ের করে জেলবন্দির ‘ছক’ কষছে ইউনূস সরকার।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হামলা, ভাঙচুর ও খুনের চেষ্টার মামলায় হাসিনাপন্থী ৮৪ জন আইনজীবীর জামিন খারিজ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এমন পরিস্থিতিতে ভার্চুয়াল আলোচনায় আওয়ামি লিগ কর্মী-সমর্থকদের দুঃখ-দুর্দশার কথা শোনেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। এরই সঙ্গে আওয়ামী লীগ কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন যে চিন্তা করবেন না। আমি সব ঘটানার বিচার করব। আল্লাহ তাই বাঁচিয়ে রেখেছেন। সোমবার একঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে তাঁর ভাষণ। তা মন দিয়ে শোনেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা।
Leave a comment
Leave a comment