গত কয়েক দিন ধরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশ জুড়ে।প্যালেস্তেনীয়দের উপর লাগাতার ইজরায়েলি হামলার প্রতিবাদে গত কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলাকালে সিলেটসহ বিভিন্ন শহরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।সোমবার সকাল থেকে একাধিক সংগঠনের ডাকে দলে দলে সে দেশের সংখ্যাগুরু মানুষেরা পথে নামেন। শুধু তাই নয়, কেএফসি ও পিৎজা হাট সহ একাধিক দোকানে, শোরুমে ব্যাপক ভাঙচুর চলে।এমনকি গোটা পৃথিবীতে জুতোর অন্যতম বড় ব্রান্ড বাটার দোকানেও হামলা চলে।
এদিকে এই হিংসায় জড়িত থাকার অভিযোগে কমপক্ষে ৪৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে দুটো মামলা দায়ের করা হয়েছে।এদিকে গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলাকালে সিলেটসহ বিভিন্ন শহরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা তদন্তে সহায়তা করতে পারে এমন তথ্য যাদের কাছে আছে তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।মঙ্গলবার বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
বাংলাদেশের প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, গাজায় ইজরায়েলের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে অল স্টুডেন্টস ইউনিটি চট্টগ্রাম, ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইনকিলাব মঞ্চ, হেফাজত ইসলামের পাঁচলাইশ থানা শাখা, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, ইউনিটি ফোর্স বাংলাদেশসহ আরও একাধিক সংগঠন।
সোমবার সিলেট-সহ বাংলাদেশের বেশ কিছু শহরে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলা এবং ভাঙচুরের অভিযোগ উঠে আসে।‘বাটা’-র বিভিন্ন বিক্রয়কেন্দ্রে ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। এ ছাড়া ‘কেএফসি’-র কিছু শাখাতেও জনরোষ আছড়ে পড়ে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর ইজরায়েলি প্রতিষ্ঠান দাবি করে সেগুলিতে হামলা চালিয়েছে স্থানীয় জনতা।এমনকী আমেরিকা, ইজরায়েলের বিরুদ্ধেও স্লোগান দিতে থাকেন সাধারণ মানুষ।যা নিয়ে সে দেশজুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
বার বার এই রকম বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় আতঙ্কের মধ্যে সে দেশে বসবাসকারী বহু সাধারণ মানুষ।গত অগস্ট মাসে হাসিনা সরকারের পতনের পর প্রচুর অশান্তি, সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার, বাড়িঘর ভাঙচুর, নারী নির্যাতনের ঘটনা দেখেছে বাংলাদেশ।শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পরেই বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ভাঙা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তি। হামলা চালানো হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত বাড়িতে। গত ফেব্রুয়ারি মাসেও ফের ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়িতে। বৃহস্পতিবার বুলডোজ়ার এনে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় সেই বাড়ি। সব কিছু দেখেও নির্বিকার ছিল প্রশাসন। ওই বাড়িটি মাটিতে মিশিয়ে দিয়ে রীতিমত তালিবানি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে হাসিনা বিরোধী বিক্ষোভকারীরা। পাবনা, কিশোরগঞ্জ এবং চুয়াডাঙ্গাতে আওয়ামি লিগের কার্যালয় ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। সেই সময়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালও ভাঙচুর করা হয়। প্যালেস্তাইনে ইজরায়েলি হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন শোরুম, কার্যালয় ইতাদি জায়গায় ভাঙচুরের ঘটনায় ফের প্রশ্ন উঠছে। কিছু অপছন্দ হলেই ভেঙে ফেলার এ কোন রাজনীতি হাজির হল বাংলাদেশে? প্রশ্ন উঠছে সমাজে এই ধরনের মানুষের প্রশ্রয় পাওয়া এবং অন্তবর্তী সরকারের সঠিক ভূমিকা নিয়েও।
Leave a comment
Leave a comment