সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়
হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট। রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি দপ্তর মামলায় জর্জরিত। আর কোন দপ্তরের বিরুদ্ধে কি মামলা, মামলার বর্তমান পরিস্থিতি কি, সেই মামলায় কোন পথে এগোনো যাবে এই সামগ্রিক বিষয়গুলির নজরদারি বা তদারকি এবং আলাপ আলোচনা করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বা রাজ্য মন্ত্রিসভায় রিপোর্ট দিতে একটি মুখ্য সচিবের তত্ত্বাবধানে ছয় সদস্যের মন্ত্রীগোষ্ঠী তৈরি করল নবান্ন। আজ রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এই মন্ত্রীগোষ্ঠীকে নজরদারি ও তদারকের দায়িত্ব দেওয়া হল। এই মন্ত্রীগোষ্ঠীতে থাকছেন রাজ্যের আইন মন্ত্রী মলয় ঘটক, অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, পুর ও নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী শশী পাঁজা এবং রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। মূলত হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত শিক্ষা দপ্তরের এস এস সি মামলা যে মামলায় ইতিমধ্যেই ছাব্বিশ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষা কর্মীদের প্যানেল বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। তার পাশাপাশি সুপার নিউ মেরারি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা, ওবিসি তালিকা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টে মামলা, মাধ্যমিক শিক্ষার পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টে একাধিক মামলা, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিয়ে মামলা যা সুপ্রিম কোর্টে এখনো বিচারাধীন, কলেজ সার্ভিস কমিশন নিয়ে হাইকোর্টে বিচারাধীন মামলা, শিল্প সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে হাইকোর্টে একাধিক মামলাসহ রাজ্যজুড়ে একগুচ্ছ রাজনৈতিক মামলা। এই যাবতীয় মামলার পাহাড়ে একদিকে যেমন রাজ্য সরকারি কাজ বা উন্নয়নের কাজ বাধা প্রাপ্ত হচ্ছে তেমনি বিরাট অংকের সরকারি টাকার খেসারত দিতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। কোথায় যোগ্য আইনি সংস্থান পাওয়া যাচ্ছে বা সরকার নিযুক্ত আইনজীবীরা যথাযথভাবে আদালতের কাছে আইনি ব্যাখ্যা তুলে ধরতে পারছেন কিনা এই যাবতীয় বিষয় নজরদারি করবে এই মন্ত্রীগোষ্ঠী। মুখ্য সচিবের তত্ত্বাবধানে আলাপ আলোচনা করে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে যেমন এই মন্ত্রীগোষ্ঠী এই বিচারাধীন মামলাগুলি নিয়ে রিপোর্ট দেবে তেমনি মুখ্যমন্ত্রীকেও আলাদা করে রিপোর্ট দিতে হবে মন্ত্রীগোষ্ঠীকে। ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই সমালোচনায় বিদ্ধ মুখ্যমন্ত্রী এবার সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টে বিচারাধীন মামলাগুলির যাবতীয় অগ্রগতি এবং এই সংক্রান্ত কাজের তদারকি নবান্নর নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই মন্ত্রীগোষ্ঠী গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বলে মনে করছে প্রশাসনিক মহল।