ক্রিকেটের বর্ণময় মঞ্চে কেবল জনপ্রিয়তা থাকলেই আন্তর্জাতিক জায়গা সুরক্ষিত রাখা যায় না—এমনই সোজাসাপটা বার্তা দিলেন ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অলরাউন্ডার মইন আলি। এই আইপিএল মরশুমে কলকাতার জার্সিতে খেললেও তাঁর কথা, স্পষ্ট ভাষায় জানালেন, ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট আর আন্তর্জাতিক মঞ্চ এক মাপকাঠিতে মাপা যায় না। তাঁর মতে, লিগ মানে অর্থ আর বিনোদনের খেলা—সেখানে অভিজ্ঞতা বা খ্যাতি থাকলেই খেলার সুযোগ মেলে। কিন্তু দেশের প্রতিনিধিত্ব মানে দায়িত্ব, যেখানে নিজেকে প্রতিনিয়ত যাচাই করতে হয়।
তিনি বলেন, “যদি ইংল্যান্ড কেবল একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি হত, আমি এখনও মাঠে থাকতাম। কিন্তু জাতীয় দলে জায়গা পাওয়া মানে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা। এখন এমন অনেক প্রতিভাবান তরুণ রয়েছেন, যাঁরা নিজ নিজ দক্ষতায় উজ্জ্বল। তাই নিজেই এক ধাপ পেছনে সরেছি।” আত্মসম্মান আর বাস্তবতা মিলিয়েই তাই তাঁর এই সিদ্ধান্ত।
তাঁর কথায় নাম না করেই যেন টার্গেট করা হলো বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মার মতো জনপ্রিয় মুখদের। একদিকে বিরাট এখনও রান পাচ্ছেন, অন্যদিকে রোহিত ছন্দহীন। মইনের ইঙ্গিত স্পষ্ট, “শুধু ভক্তদের ভালোবাসা দিয়ে জাতীয় দলের জায়গা ধরে রাখা ঠিক নয়।
ফর্মে না থাকলে সেই বাস্তবতাকে অস্বীকার করে চলা অনুচিত—এটাই স্পষ্ট করে দিলেন মইন আলি। তাঁর মতে, শুধুমাত্র অতীতের খ্যাতি কিংবা ফ্যানদের চিৎকারে জাতীয় দলে জায়গা নিশ্চিত থাকে না। আন্তর্জাতিক স্তরে নিজেকে প্রমাণ করার কোনও বিকল্প নেই। জনপ্রিয়তা সম্মান দিতে পারে, কিন্তু সেটা পারফরম্যান্সের শূন্যতা ঢেকে রাখতে পারে না।
তিনি মনে করিয়ে দিলেন, “দেশের হয়ে খেলাটা গর্বের, আর সেই দায়িত্ব পালনের জন্য নিজেকে সবসময় প্রস্তুত রাখতে হয়। যদি কেউ নিজেকে সেই মানদণ্ডে না দেখাতে পারে, তবে একটু পেছনে সরে আসাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।”
মইনের কথায়, আন্তর্জাতিক মঞ্চে সুযোগ পাওয়া রীতিমতো প্রতিযোগিতা, যেখানে প্রতিটি নির্বাচনের পেছনে থাকে পরিশ্রম, পারফরম্যান্স আর ধারাবাহিকতা। অতীতের সাফল্য স্মরণীয় হলেও, তা দিয়ে বর্তমানের ব্যর্থতা ঢেকে রাখা যায় না। নিজের অবস্থান ধরে রাখতে হলে, প্রতিদিন নিজেকে প্রমাণ করতে হয়। নাম নয়, খেলাটা কথা বলুক—এটাই তাঁর বার্তা।