চেন্নাইয়ের ভাগ্যে এবারও জুটল পরাজয়ের কাঁটা। চতুর্থ ম্যাচেও হারের দুঃস্বপ্ন থেকে মুক্তি মিলল না রুতুরাজ বাহিনীর। টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলেই প্রিয়াংশ ঝড়ের ইঙ্গিত দেন। কিন্তু তাঁর ঝলকানি সঙ্গীদের মধ্যে দেখা গেল না—প্রভসিমরন শূন্য, শ্রেয়স ৯, ম্যাক্সওয়েল মাত্র ১, পুরো মিডল অর্ডার ভেঙে পড়ল মাটিতে। পাঁচ উইকেট হারিয়ে পঞ্জাব তখন ৮৩ রানে।
পঞ্জাবের ইনিংস যখন প্রায় ধসের মুখে, তখনই আলো হয়ে জ্বলে উঠলেন প্রিয়াংশ। শুরুতে যেভাবে উইকেট পড়ছিল, তাতে ইনিংসের ভবিষ্যৎ ছিল ঘোর অনিশ্চয়তায়। কিন্তু প্রিয়াংশ এলেন, দেখলেন, আর ব্যাটে আগুন ঝরিয়ে পরিস্থিতি বদলে দিলেন।
পাথিরানার ওভারে ছক্কা-বৃষ্টিতে চেন্নাইকে চাপে ফেললেন, আর মাত্র ৩৯ বলে শতরান পূর্ণ করে ,তাঁর ব্যাটে এলো ৭টি চার আর ৯টি দানবীয় ছক্কা! অন্য প্রান্তে শশাঙ্ক দারুণ সঙ্গ দিলেন, জানসেনও হাত খুললেন শেষদিকে। তিনে মিলে পঞ্জাবের ইনিংস গড়ে তুললেন পাহাড়ের মতো—মাত্র ২০ ওভারে স্কোর দাঁড়াল ২১৯! যা দেখে চেন্নাইয়ের ডাগআউটেই যেন হাওয়া খারাপ!
লক্ষ্য ছিল পাহাড়প্রমাণ—২২০ রান! শুরুতে রাচিন আর কনওয়ের ব্যাটে যখন বাউন্ডারির বাজনা বেজে উঠল, তখন মনে হচ্ছিল, এবার বুঝি রূপকথার মতো ঘুরে দাঁড়াবে চেন্নাই। কিন্তু ম্যাক্সওয়েলের ঘূর্ণিতে রাচিন কাঁপতেই শুরু হল ভাঙন। রুতুরাজ তাড়াতাড়ি ফিরলেন, শিবমের ব্যাটে কিছুটা আশা টিকেছিল, আর কনওয়ে লড়াই করলেন, তুললেন দুর্দান্ত অর্ধশতরান।
তবু পথ ছিল অনেক কঠিন। কনওয়ে ৬৯ রানে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তেই চাপ আরও বাড়ে। শেষ ওভারে ৫৯ রানের অসম লড়াইয়ে মাঠে নামলেন ধোনি। পুরনো দিনের মতোই ছক্কা-চারের খেলা শুরু করলেন, জয়ের গন্ধও যেন পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু সময় আর বল, দুটোই দ্রুত ফুরিয়ে এল। ফার্গুসন আর অর্শদীপ একেবারে বন্দ করে দিলেন চেন্নাইয়ের ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন।
শেষে এসেও পরিস্থিতি পালটাতে পারলেন না মহেন্দ্র সিং ধোনি। ২৭ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেও জয়টাকে আর টেনে আনতে পারলেন না অধিনায়ক। স্কোরবোর্ডে থামল ২০১—স্বপ্নপূরণের ঠিক আগে থেমে যাওয়া একটা ট্র্যাজেডি। পঞ্জাব যেন নিজের হাতে শেষ পেরেকটি ঠুকে দিল চেন্নাইয়ের হারের কফিনে।
চার ম্যাচে টানা হার—রুতুরাজদের কাছে এ যেন এক দুঃস্বপ্নের ধারা। অন্যদিকে, শ্রেয়স আয়ারের দল বুদ্ধি, বল আর ব্যাটের মঞ্চে বাজিমাত করল। ম্যাচের পর ম্যাচ নিজেদের ছাপ রেখে চলেছে পঞ্জাব—আজও তার ব্যতিক্রম নয়।