মাঠে মারা গেলো সৌরভের পাঁয়তারা
অথৈ জলে, সৌরভের শালবনীর ইস্পাত কারখানা! কোথায় গেল এত কর্মসংস্থানের আশ্বাস?
বলেছিলেন কারখানা তৈরি করবেন! কিন্তু কই? শালবনীতে এখনও শুরু হয়নি ইস্পাত কারখানার কাজ। রাজ্যের জন্য বিনিয়োগ আনতে ইতিপূর্বে স্পেনে ছুটে গিয়েছিলেন সৌরভ। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফর সঙ্গী হন তিনি। তারপরেই জানা গেল, সৌরভের সেই ইস্পাত কারখানা শালবনীতে নাকি হচ্ছে না। সৌরভ নিজেই জানিয়েছিলেন এটি তাঁর দ্বিতীয় ইস্পাত কারখানা। কিন্তু সেই দ্বিতীয় ইস্পাত কারখানার ভবিষ্যৎ এখন অতীত।
সেই সময়, সৌরভ বলেছিলেন অনেকেই জানেন না, তিনি ২০০৭ সালে প্রথম ইস্পাত কারখানা তৈরি করেছিলেন। শালবনীতে ইস্পাত কারখানা হলে সেটি হতো দ্বিতীয় ইস্পাত কারখানা তাও আবার নাকি সৌরভের তৈরি। তারপরে সৌরভ জানালেন, শালবনীতে নয় সৌরভের ইস্পাত কারখানা তৈরি হচ্ছে গড়বেতায়। কিন্তু কেন শালবনী ছেড়ে গড়বেতায় ইস্পাত কারখানা দুইটি স্বপ্ন দেখছিলেন সৌরভ? জানা যায়, শালবনীতে জমি পাওয়া নিয়ে একটা সমস্যা রয়েছে বলে সূত্রের খবর। কিন্তু গড়বেতায় কোন ইস্পাত কারখানা তৈরি হয়নি।
সৌরভ জানিয়েছিলেন, সেই কারখানায় হবে প্রচুর সংখ্যক মানুষের কর্মস্থান। প্রায় সাত হাজার লোকের কর্মসংস্থান হতে চলেছে এই কারখানায়। ফলে গড়বেতায় যে এবার বিরাট কর্মসংস্থান হতে চলেছে তা আর বলা হবে না। কিন্তু কর্মসংস্থান দূরে থাক কারখানার জন্য একটা ইট গাঁথাও শুরু হয়নি। ২০০৭-০৮ সালে জিন্দালদের প্রস্তাবিত ইস্পাত প্রকল্প ঘিরে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল শালবনীর মানুষ। কিন্তু ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর জিন্দালদের তরফে জানানো হয়, প্রকল্পের কাজ আপাতত স্থগিত
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে যারা খুব কাছ থেকে দেখেছেন বা যারা ব্যক্তিগতভাবে তাকে চেনেন, তারা খুব ভালো করে জানেন যে, এই প্রিন্স অফ ক্যালকাটা নিজের লাভ ছাড়া এক পাও হাঁটতে নারাজ। তাই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় যে সিদ্ধান্তই নিন না কেন, তার পেছনে যে তার বিরাট বড় একটা উদ্দেশ্য রয়েছে একথা বলা চলে। প্রয়াগ ফিল্ম সিটির জমি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে নাকি দিয়েছে রাজ্য সরকার। পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায় অবস্থিত এই ফিল্ম সিটির ৩৫০ একর জমি সৌরভকে এক টাকায় দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। সংস্থাকে কিছু না-জানিয়ে প্রাক্তন ক্রিকেটারকে এই জমি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন আমানতকারীরা । তবে তাঁদের দাবি মেনে এই মামলা জনস্বার্থ মামলার তকমা পায়নি। রাজ্য সরকার, সেবি ও তালুকদার কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে চন্দ্রকোনার ওই জমি ফিজিক্যালি খতিয়ে দেখবে বলে জানায় হাইকোর্ট। ওই জমি নিলাম না করে, কোনও ওপেন টেন্ডার না করে একজনকে বিক্রি করা হল তার জন্য আদালত জবাবদিহি করতে বলে রাজ্যকে। জমি হস্তান্তরের বিষয়ে আদৌ কোনরকম অনিয়ম হয়েছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখতে বলা হয়।
এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের রিপোর্ট তলব করেছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চ। অবশেষে এদিন আদালতের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এই পুরো বিষয়টি নিয়ে খতিয়ে দেখবে সেবি। তাই রাজ্যের পক্ষ থেকে কোন একজন শিল্পপতিকে এইভাবে বিতর্কিত জমি পাইয়ে দেওয়ার কোনো জায়গা থাকবে না।