প্রেমের বসন্ত, সরস্বতীর আরাধনায় মিলন মেলা
বাসন্তী রঙের শাড়ি, হালকা রোদ আর কিশোর হৃদয়ের দোলাচল—সরস্বতী পূজার দিন মানেই যেন প্রেমের এক নতুন অধ্যায়। বাংলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে এই দিনটি শুধু বিদ্যার দেবীর আরাধনায় সীমাবদ্ধ থাকে না, হয়ে ওঠে ভালোবাসার প্রকাশের শ্রেষ্ঠ সময়। নবীন প্রেমের স্বপ্ন দেখা থেকে শুরু করে গোপন প্রণয়ের প্রথম স্বীকারোক্তি—সবই যেন জমে ওঠে এই দিনে।
ওই আসে ওই আসে—বুকের মধ্যে ঢিপঢিপ শব্দ, নতুন শাড়ি, পাঞ্জাবি আর চোখে চোখ রাখার অপেক্ষা। কলকাতা থেকে মালদা, দুর্গাপুর থেকে শিলিগুড়ি—প্রায় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই এই দিনটিতে প্রেমিক-প্রেমিকার আনাগোনা বেড়ে যায় চোখে পড়ার মতো। কোথাও পুষ্পাঞ্জলি দেওয়ার বাহানায় একসঙ্গে দাঁড়ানো, তো কোথাও প্রসাদ বিতরণের আড়ালে হাতের ছোঁয়া!
কিন্তু কেন সরস্বতী পূজা হয়ে উঠল বাংলার ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’? মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, এদিন পড়ুয়াদের মনে এক অদ্ভুত স্বাধীনতার অনুভূতি কাজ করে। পরিবারিক কড়াকড়ি কিছুটা কমে, চারপাশের পরিবেশ হয় উদার। তার উপর নতুন পোশাকের বাহার, বন্ধুদের অনুপ্রেরণা আর প্রেমের প্রকাশের উপযুক্ত সময় সব মিলিয়ে প্রেমিক-প্রেমিকাদের জন্য এটি সেরা দিন হয়ে ওঠে।
সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে এখন সরস্বতী পূজার প্রেম আরও বেশি প্রকাশ্য। আজকে প্রপোজ না করলে কবে করবি?—এই রকম মিম ঘুরে বেড়ায় ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুকে। কেউ কেউ আবার মজা করে বলেন, যার সরস্বতীর পূজায় পাশে দাঁড়ানোর জায়গা নেই, তার প্রেমে সার্থকতা নেই!
তবে এর মধ্যেও বিপত্তি আছে। কিছু কর্তৃপক্ষ প্রেমের বাড়াবাড়ি আটকাতে কড়া নির্দেশনা দেয়, এমনকি শিক্ষাঙ্গনের বাইরে পুলিশের নজরদারি পর্যন্ত থাকে। তবুও তরুণ মন তো থেমে থাকে না!
অতএব, আজকের দিনে প্রেম যদি একটু বেশি মাত্রায় হয়, তবে তাকে রুখবে কে? বিদ্যার দেবীর আশীর্বাদ নিয়ে যদি মন খোলে, তবে তা বাংলার সংস্কৃতিরই অংশ! সরস্বতী পূজার ছোঁয়ায় ভালোবাসাও পবিত্র, অনুভূতিগুলোও অমলিন।