একবার কেউ মদ্যপানে আসক্ত হয়ে পড়লে, সে আর কখনও তা থেকে মুক্তি পেতে পারে না। এমন ধারণা বহুদিনের। কিন্তু অনেকেই আছেন যারা মদ্যপানের বদঅভ্যাস ত্যাগ করতে চান। কিন্তু কাওকে মদ্যপান করতে দেখার পর তারা নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। তাহলে কি সত্যিই কখনও মদ্যপান ত্যাগ করা সম্ভব না? আপনিও কি এই কথা ভেবে চিন্তিত? চিন্তার দিন শেষ। অনেক কার্যকর উপায় আছে যার মাধ্যমে অ্যালকোহল সেবন কমানো এবং বন্ধ করা যেতে পারে।
অ্যালকোহল পান করা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। যারা প্রতিদিন বা মাঝে মাঝে মদ্যপান করেন তারাও একথা ভালোভাবেই জানেন। তবে, তার পরেও, সহজেই সারা বিশ্বে ওয়াইন প্রেমীদের দেখা মেলে। কিন্তু অ্যালকোহল পান করলে অনেক ধরণের ক্ষতি হতে পারে আপনার শরীরের। হৃদরোগ এবং লিভারের রোগের কারণ হতে পারে অ্যালকোহল আসক্তি। এই দুটোই মারাত্মক হতে পারে। এছাড়াও, অ্যালকোহলের আসক্তি আলসার, ডায়াবেটিসের জটিলতা, যৌন সমস্যা, জন্মগত ত্রুটি, হাড়ের ক্ষয়, দৃষ্টি সমস্যা, ক্যান্সারের ঝুঁকি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাসের মতো সমস্যাও সৃষ্টি করতে পারে।
প্রথম যে জিনিসটি প্রয়োজন তা হলো মদ্যপান ত্যাগ করার জন্য নিজেকে সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত করা। কারণ প্রায়শই মনে হয় যে, “আমি আজ মদ্যপান করব, কিন্তু কাল থেকে সবকিছু বন্ধ করে দেবো”। কিন্তু সেই “কাল” আর এসে হাজির হয়না! তাই এইসব অদ্ভুত পরিকল্পনা করার পরিবর্তে, এর জন্য নিজেকে বিশেষ ভাবে jসম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত করা ভাল। তবেই আপনি এই অভ্যাস থেকে মুক্তি পেতে পারবেন।
এছাড়াও, এই খারাপ অভ্যাস থেকে মুক্তি পাওয়ার কারণ খুঁজে বের করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কেন মদ্যপান ছেড়ে দিতে চান তার কারণ খুঁজে বের করুন।
যখন আপনি মদ্যপান ত্যাগ করার জন্য জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকবেন এবং কারণও খুঁজে পাবে, তখন একটি তারিখ ঠিক করুন এবং সেই তারিখ আসার আগে, আপনার বাড়ি, অফিস, গাড়ি বা যেখানে মদ রাখেন সেখান থেকে মদের বোতলগুলো সরিয়ে ফেলো। তাহলে, ওই তারিখে মদ্যপান বন্ধ করুন।
যেদিন আপনি মদ্যপানের অভ্যাস ত্যাগ করবেন, সেদিনই শুরুতে কেবল মদের কথাই মায়াহু আসবে এবং মদ্যপানের ইচ্ছা করতে পারে। এমন সময়ে নিজের মনোযোগ অন্য কোনও দিকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। এমন সময় আপনি গান শুনতে পারেন, পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে পারেন, অথবা আপনার প্রিয় শখ অনুসরণ করতে পারেন। এতে মন থেকে মদের চিন্তা দূর হবে এবং ধীরে ধীরে মদ্যপানের অভ্যাস শেষ হয়ে যাবে।
এছাড়াও, আপনি আপনার পরিবার, বন্ধুবান্ধব বা অফিসের সহকর্মীদের আপনার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বলতে পারেন যাতে তাঁরা আপনাকে আপনার সিদ্ধান্তে অটল থাকতে অনুপ্রাণিত করতে পারে এবং আপনি আপনার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত না হন। মদ্যপান ত্যাগের যাত্রা এত সহজ নয়। তবে আপনি যদি নিজেকে অগ্রাধিকার দেন এবং নিজের সিদ্ধান্তের ওপর মনোনিবেশ করেন তবে আপনি সহজেই এই অভ্যাসকে বিদায় জানাতে পারবেন।