দীর্ঘ ২৭ বছর পর দিল্লির রাজনীতির ইতিহাস নতুন মোড় নিল। বিধানসভা নির্বাচনে তীব্র ধাক্কা খেল আম আদমি পার্টি (AAP)। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, মণীশ সিসোদিয়া, অতিশী— একের পর এক হেভিওয়েট প্রার্থী ধুঁকছেন। অপরদিকে, বিপুল জয় ছিনিয়ে নিয়ে দিল্লির ক্ষমতায় ফিরল ভারতীয় জনতা পার্টি (BJP)।
রাজধানীর রাজনৈতিক হাওয়া শুরু থেকেই বিজেপির পক্ষে ছিল। কিন্তু ভোটগণনার শুরুতে কেজরিওয়াল শিবির কিছুটা আশা দেখালেও দ্রুতই ছবিটা বদলে যায়। সকাল গড়াতেই বিজেপির জয়জয়কার শুরু হয়। দিল্লির প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে পদ্মফুলের ঝড় উঠতে থাকে। গত কয়েক মাস ধরে আপ সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে, যা এই নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলে বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
অন্যদিকে, কংগ্রেস একরকম অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে দিল্লির রাজনীতিতে। দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের সময় কংগ্রেস একছত্রভাবে রাজধানী শাসন করলেও এখন তাদের ভোটব্যাংক প্রায় শূন্য। কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা অজয় মাকেন শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে আম আদমি পার্টিকে দায়ী করেছেন বিজেপির উত্থানের জন্য। তাঁর মতে, আপ যদি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে লড়াই করত, তবে ফল অন্যরকম হতে পারত। কিন্তু কেজরিওয়াল নিজের সিদ্ধান্তেই অনড় থেকে দিল্লির রাজনীতিতে বিজেপিকে জায়গা করে দিয়েছেন।
লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই দিল্লিতে বিজেপির ভোটব্যাংক মজবুত হচ্ছিল। গত তিনটি লোকসভা ভোটে দিল্লির সাতটি আসনেই জিতেছে বিজেপি। এবার বিধানসভা নির্বাচনেও সেই ধারা বজায় রাখল তারা। শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদারের মতো বিজেপি নেতারা দাবি করেছেন, দিল্লির সাফল্য বাংলাতেও প্রতিফলিত হবে। দিল্লির বাঙালি ভোটারদের মন জয় করতে বাংলার বিজেপি নেতৃত্বকেও প্রচারে নামিয়েছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
অন্যদিকে, কেজরিওয়ালের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন বড় প্রশ্ন উঠছে। দুর্নীতির অভিযোগে কিছুদিন আগেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। জামিনে মুক্তি পেলেও তাঁর জনপ্রিয়তা যে ধাক্কা খেয়েছে, তার স্পষ্ট প্রমাণ দিল্লির ভোট। আপের ‘ঝাড়ু’ এবার কার্যত ভেঙে পড়েছে পদ্মের ঝড়ে।