শিশুর মুখে খাবার তুলে দেওয়ার সহজ উপায় কি মোবাইল স্ক্রিন? অনেক অভিভাবকই হয়তো মাথা নাড়বেন, কারণ এই দৃশ্য আজ ঘরে ঘরে। খাবারের সময় মোবাইল বা টিভির সামনে বসিয়ে দেওয়া যেন এক অলিখিত নিয়ম হয়ে উঠেছে। কিছুতেই খেতে চাইছে না? কার্টুন বা ইউটিউবের গান চালিয়ে দিলেই খেয়ে নিচ্ছে! সাময়িকভাবে এই কৌশল সফল মনে হলেও এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ভয়াবহ হতে পারে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
গবেষণা বলছে, ১২-৪৮ মাস বয়সি শিশুদের মধ্যে প্রতিদিন অন্তত এক ঘণ্টা গ্যাজেট ব্যবহারের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। অভিভাবকদের অনেকেই ব্যস্ত জীবনে নিজেদের কাজ সেরে নিতে শিশুকে মোবাইল বা টিভির সামনে বসিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু এর ফলে শিশুর ভাষা শেখার প্রক্রিয়া মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। স্ক্রিনের সামনে বসে থাকা শিশু শুধুমাত্র দৃশ্য দেখছে, সরাসরি কোনও কথোপকথনে অংশ নিচ্ছে না। ফলে নতুন শব্দ শেখার সুযোগ কমছে, বাকসংক্ষেপ বাড়ছে এবং ধীরে ধীরে সামাজিক মেলামেশার ক্ষমতা কমে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু ব্যাকগ্রাউন্ডে টিভি চালু থাকলেও শিশুর মনোযোগ বিঘ্নিত হতে পারে। এতে ভাষাগত বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হয়। শিশুদের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা, গল্প বলা কিংবা মজার আলোচনা করাই ভাষা শেখার জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
এই সমস্যার সমাধান কী? গবেষকেরা বলছেন, শিশুদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা, তাদের গল্প বলা, বই পড়ার প্রতি আগ্রহী করে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশুকে মোবাইল স্ক্রিনের বদলে বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতায় অভ্যস্ত করাই একমাত্র পথ। বাবা-মা একটু ধৈর্য ধরে শিশুর কৌতূহলের উত্তর দিলে, তাদের নতুন শব্দ শেখার সুযোগ মিলবে, ভাষা বিকাশও হবে স্বাভাবিক। তাই সহজ সমাধানের পথে না হেঁটে, ভবিষ্যৎ নিয়ে একটু ভাবুন। শিশুর হাতে মোবাইল তুলে দেওয়ার আগে, ভাবুন তার বিকাশের গতি কোনদিকে যাচ্ছে!