মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দুই দিনের সফরে আমেরিকা পৌঁছেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। মনে করা হচ্ছে, ভারত-আমেরিকা সম্পর্কের ক্ষেত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই সফর। আশা করা হচ্ছে, নরেন্দ্র মোদী এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে বৈঠকে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। এর মধ্যে থাকতে পারে আমেরিকা থেকে বিতাড়নের সময় ভারতীয়দের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, ট্রাম্পের শুল্ক নীতি এবং চীনের আগ্রাসন। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এই বৈঠকে।
এক সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন অনুসারে, নরেন্দ্র মোদীর সফরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে পারে ভারতীয় নির্বাসিতদের প্রতি মানবিক আচরণ। সম্প্রতি, ১০৪ জন অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীর প্রথম দলকে আমেরিকা থেকে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ভারতে নাগরিকদের প্রতি দুর্ব্যবহারের কারণে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ভারতীয়দের শিকলবন্দি করে পাঠানোর ক্ষেত্রেও সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে। এমন পরিস্থিতিতে, ভারত এই সফরে আমেরিকার কাছ থেকে তার নাগরিকদের প্রতি মানবিক আচরণের বিষয়ে আশ্বাস চাইতে পারে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বাণিজ্য শুল্কের বিষয়ে আক্রমণাত্মক অবস্থানে রয়েছেন। ট্রাম্প অনেক দেশের উপর শুল্ক আরোপ করেছেন এবং ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন। সম্প্রতি অ্যালুমিনিয়াম ও ইস্পাত আমদানির উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। ভারতীয় কোম্পানিগুলি দেশীয় ইস্পাতের দামের উপর এর প্রভাব এবং মার্কিন ইস্পাত বাজারে ঝুঁকি নিয়ে উদ্বিগ্ন। নরেন্দ্র মোদীর সফরের আগে উচ্চমানের মোটরসাইকেল এবং বৈদ্যুতিক ব্যাটারির উপর শুল্ক কমিয়েছে ভারত। এই পরিস্থিতিতে, আশা করা হচ্ছে যে উভয় পক্ষই বাস্তবসম্মত পদ্ধতির মাধ্যমে এই বিষয়ে আলোচনা করতে পারবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে বৈঠকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের ব্যয় বৃদ্ধি পাবে এবং নতুন চুক্তি ঘোষণা করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারতীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, দেশীয় কোম্পানিগুলি মার্কিন জ্বালানি সরবরাহ, বিশেষ করে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের ক্রয় বাড়ানোর জন্য যোগাযোগ করছে। এই এলাকায় কিছু ঘোষণাও শোনা যাচ্ছে।
আমেরিকার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কিছুটা অন্যরকম। তারা ঐতিহ্যবাহী মিত্র নয় ঠিকই, তবে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বীও নয়। তবে আমেরিকার প্রচেষ্টা ছিল ভারতকে চীনের আরও কাছে নিয়ে আসা। আমেরিকা চীনকে কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখলেও, এই প্রতিবেশীর সঙ্গে ভারতের সম্পর্কও একেবারেই মসৃণ নয়। অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, চীনকে ঘিরে ফেলার জন্য ভারতের দিকে ঝুঁকতে পারেনট্রাম্প। নরেন্দ্র মোদীর বর্তমান সফরে চীনের আগ্রাসন মোকাবেলায় সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।