ট্যাংরার অটল শূর রোডে এক ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ড। বুধবার রাতে বাড়ির দোতলা থেকে উদ্ধার হয় দুই গৃহবধূ—রোমি দে ও সুদেষ্ণা দে এবং এক কিশোরী—প্রিয়ম্বদা দের দেহ। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, তিনজনকেই পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে।
ঘটনার পরেই পুলিশের সন্দেহের কেন্দ্রে উঠে আসে বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরাগুলি। জানা যায়, বাড়ির প্রায় বিশটি ক্যামেরা থাকলেও, প্রত্যেকটি অকেজো! অথচ দিন কয়েক আগেও এগুলি সচল ছিল। তাহলে কার নির্দেশে এবং কী উদ্দেশ্যে ক্যামেরাগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল? পুলিশের সন্দেহ, এই হত্যাকাণ্ড সম্পূর্ণ পরিকল্পিত।
শুক্রবার ফরেন্সিক টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। কিন্তু কোনও ক্যামেরার ফুটেজই পুলিশ পায়নি। এমনকি, সিসিটিভি ফুটেজ পাসওয়ার্ড-সুরক্ষিত, ফলে তদন্তে বাধা তৈরি হয়েছে। পুলিশ দ্রুত সেই ফুটেজ উদ্ধার করতে তৎপর।
এদিকে, ঠিক বিপরীত দিকের একটি বাড়ির ক্যামেরায় ধরা পড়েছে এক রহস্যজনক দৃশ্য। বুধবার রাত ১২:৫৮ মিনিটে বাড়ির দুই কর্তা, প্রণয় ও প্রসূন দে, তাঁদের গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যান। সঙ্গে ছিলেন পরিবারের নাবালক সদস্য, প্রতীপ। বাইপাসে ভোর ৩টায় তাঁদের গাড়ির দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু মাঝের দুই ঘণ্টায় তাঁরা কোথায় ছিলেন? কী করছিলেন?
এছাড়া, দোতলায় মৃতদেহ পাওয়া গেলেও, রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার হয়েছে তিনতলা থেকে। বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় রক্তের দাগও পেয়েছে পুলিশ। তাহলে কীভাবে ঘটল এই হত্যাকাণ্ড? হত্যার অস্ত্র তিনতলায় কীভাবে পৌঁছল?
এই প্রশ্নগুলির উত্তর খুঁজতে মরিয়া তদন্তকারী দল। দে পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে, সিসিটিভি ক্যামেরাগুলির হঠাৎ অকেজো হয়ে যাওয়া এবং দুই ভাইয়ের আচরণ সন্দেহ বাড়িয়েছে। ট্যাংরার এই তিনটি মৃত্যু কি শুধুই দুর্ঘটনা, নাকি এর পেছনে লুকিয়ে আছে এক ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র? পুলিশ খতিয়ে দেখছে প্রতিটি সম্ভাবনা।