বাংলাদেশে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে আসতে চলেছে নতুন রাজনৈতিক দল। জানা যাচ্ছে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে এক সমাবেশে নতুন এই দল আত্মপ্রকাশ করতে পারে। সেই দলের আহ্বায়ক হিসেবে থাকছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।পরের পদগুলোয় থাকছেন জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথমসারির কয়েকজন নেতা।
কিন্তু আত্মপ্রকাশের আগেই দলের কাঠামো নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। জানা যাচ্ছে পদ ও সেই পদের গুরুত্ব কতটা থাকবে তা নিয়েই সম্পূর্ণ সমঝোতায় আসতে পারছেন না নেতারা।নতুন এই দলের এই জটিলতা সামাল দিতে ১০ বা ১২টি গুরুত্বপূর্ণ পদ থাকতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে আহ্বায়ক, সদস্যসচিব, যুগ্ম আহ্বায়ক, প্রধান সংগঠক ও মুখপাত্র পদ। এমন পরিস্থিতিতে কেউ কেউ সুপার-টেন বা সুপার-টুয়েলভ স্টাইলের শীর্ষ কাঠামো তৈরির প্রস্তাব করেছেন। তবে বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
নতুন দল গঠনের প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছে মূলত জাতীয় নাগরিক কমিটি।এই নতুন দলের আহ্বায়কের দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।তাঁকে আহ্বায়ক পদে রাখার বিষয়ে শুরু থেকেই সবার মধ্যে ঐকমত্য ছিল। তিনি ২৫ ফেব্রুয়ারি উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করে নতুন দলে যোগ দিতে পারেন। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া নতুন দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্বে আসবেন বলে জানা যাচ্ছে। দলের আত্মপ্রকাশের জন্য ইতিমধ্যে একটি প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিতে জাতীয় নাগরিক কমিটির ৬৮ জন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩০ জন নেতা রয়েছেন।
বাংলাদেশের প্রথমসারির এক দৈনিকের তথ্য অনুযায়ী আত্মপ্রকাশ করতে যাওয়া নতুন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ ছটি পদে কারা থাকছেন, তা অনেকটাই চূড়ান্ত।তবে দলের সাংগঠনিক কাঠামোতে সমঝোতা বা বোঝাপড়ার ভিত্তিতে নতুন দুটি পদও সৃষ্টি করা হচ্ছে। দলে আহ্বায়ক, সদস্যসচিব, মুখপাত্র এবং মুখ্য সংগঠকের পাশাপাশি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব নামে দুটি পদ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের পর আলোচনায় ও ক্ষমতায় উঠে আসা শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক দল কেমন হবে, নতুন দল কতটা মানুষের কাছে যেতে পারবে, কতটা গ্রহণযোগ্য হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই।নতুন দলের নেপথ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের হাত রয়েছে বলে দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহলে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে কয়েক মাস আগে দাবি করেছিল খালেদা জিয়ার দল বিএনপি (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল)। তাঁদের দাবি এই পদক্ষেপ সরকারের পক্ষ থেকে একটি কৌশলগত পরিকল্পনার অংশ, যা মূলত বিএনপির রাজনৈতিক প্রভাবকে দুর্বল করার জন্য নেওয়া হচ্ছে।যদিও রাজনীতিতে সরাসরি জড়িত নন বলে বহুবার জানিয়েছেন মুহাম্মদ ইউনূস। তবে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন ছাত্ররা দল গঠন করতে যাচ্ছে এবং এটা দরকার। কারণ ছাত্ররা জীবন দিয়ে যে অর্জন করেছে তা রক্ষা করতে হবে। মানুষের মাঝে নানা ক্ষেত্রে আশা জেগেছে।প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে পরিবর্তনের।তাঁর মতে এর ফলে রাজনীতিতে পরিবর্তন আসবে।
Leave a comment
Leave a comment